মশা নিধনে ব্যর্থ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন?

বিবিসি২৪নিউজ,এম ডি জালাল: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে দুর্নীতির অন্যতম প্রধান কারণের অভিযোগ উঠেছে, ডিও (ডিমান্ড অর্ডার) বাণিজ্যের, যার সঙ্গে মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও কর্মকর্তারা জড়িত। কাজেই খনি থেকে উত্তোলিত কয়লার মধ্যে যে কয়লার ডিও বাণিজ্য হয়েছে, সেই ডিও প্রদানকারী এবং ডিও ব্যবসায়ীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। এই বিপুল পরিমাণ কয়লা চুরি যে একদিনে হয়নি, তা বলাই বাহুল্য। দীর্ঘদিন ধরেই কয়লা চুরি করে আসছিল দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তারা। ঘটনাটি এতদিন কারও নজরে এলো না কেন, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। এ কারণেও ঘটনাটির একটি ব্যাপকভিত্তিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারিতে সন্দেহভাজন জড়িত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এ খবর স্বস্তিদায়ক। এ পর্যায়ে প্রথমেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম নুরুল আওরঙ্গজেবকে।
উল্লেখ্য, কয়লা চুরির ঘটনায় গঠিত পেট্রোবাংলার তদন্ত প্রতিবেদনে এ কোম্পানির সাবেক চার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২১ জনের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। তবে এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব হজে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে ৪০ দিনের ছুটি নেয়ার কারণে তিনি এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছেন। সে জন্যই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে প্রথমে।
ইতিমধ্যে কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা লোপাটের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে চুরির পরিমাণ তার চেয়ে অনেক বেশি। আমরা মনে করি, সন্দেহভাজনদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তা বেরিয়ে আসতে পারে। দুদককে এ ব্যাপারে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে।
বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা চুরির ঘটনা একটি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি অবশ্যই। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের প্রত্যেকেরই সাজা হওয়া উচিত।
দুর্নীতির কারণে দেশের বিভিন্ন সেক্টর থেকে জাতীয় সম্পদ লোপাট হয়ে যাচ্ছে, এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এর ফলে দেশের উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে সমাজের মুষ্টিমেয় লোকের হাতে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এসে পড়ছে। এসব অর্থের বেশিরভাগই আসছে দুর্নীতি থেকে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। কাজেই দুর্নীতি রোধে সরকারের কঠোর হওয়া প্রয়োজন।
যারা জাতীয় সম্পদ চুরি করেছে তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতেই হবে। কয়লাখনির দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে দুুদক কাজ শুরু করেছে। তবে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরালো রাজনৈতিক ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি জবাবদিহি আদায়ে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে কোনো ধরনের প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীন ও কার্যকরভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে দুর্নীতির প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সবার বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে কি।