
বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | শিরোনাম | সাবলিড » ট্রাম্প একটা গুন্ডা: বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপকে রক্ষার হাতিয়ার খুঁজছে ফ্রান্স
ট্রাম্প একটা গুন্ডা: বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপকে রক্ষার হাতিয়ার খুঁজছে ফ্রান্স
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের ইস্যুতে রাশিয়ার প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের তীব্র সমালোচনা করেছেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট ডি ওয়েভার। এমনকি ট্রাম্পের আচরণ একপাক্ষিক বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এক বৈঠকে ওয়েভার বলেন, ট্রাম্প যা করছেন তা পুরোপুরি ইউরোপের বিপরীতে। সে আসলেই একটা গুন্ডা।
সেই সময় ইউক্রেনের প্রতি বেলজিয়ামের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন ওয়েভার। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ওয়েভার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর ঐতিহাসিক গুরত্বপূর্ণ মিত্র। একজন প্রেসিডেন্টের জন্য সেটি পরিবর্তন হবে না।ইউক্রেন ইস্যুতে বড় সংকটে ইউরোপ। মিত্র সীমানা থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে বিশ্বের শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক পরাশক্তি রাশিয়ার হাত থেকে ইউরোপকে রক্ষার হাতিয়ার খুঁজছে ফ্রান্স। একের পর এক পরিকল্পনা সাজিয়ে তুলছে দেশটি। নিজেদের রক্ষায় মাঠে নেমেছেন ইউরোপের বাকি অন্য নেতারাও। যার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ২৭ দেশের এক বিশেষ বৈঠকেরও আয়োজন করেছেন তারা। বিবিসি, গার্ডিয়ান।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকের পর থেকেই ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এরই মধ্যে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ইউরোপে এই উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। এরই জেরে বৃহস্পতিবারের সম্মেলনকে খুব গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন ইউরোপীয় নেতারা। তবে এ সম্মেলনের আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সতর্ক করে বলেছেন, ইউরোপ এখন ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ফ্রান্স তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের সুরক্ষার ব্যাপারে ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করতেও প্রস্তুত। এরই মধ্যে জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসও পারমাণবিক সুরক্ষা অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, ইউরোপ স্পষ্টতই একটি হুমকির সম্মুখীন। আমাদের জীবদ্দশায় যা আগে কখনো দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেছেন, এই মুহূর্তটাকে কাজে লাগাতে হবে এবং আমাদের শিল্প ও উৎপাদনশীল শক্তিকে ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজে লাগাতে হবে।
এর আগে সোমবার উরসুলা ভন ডার লিয়েন ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি নজিরবিহীন প্রস্তাব ঘোষণা করেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিআর্ম ইউরোপ’। এ পরিকল্পনায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা রয়েছে। এটি শুধু ইউক্রেনকে নয়, ইউরোপের প্রতিরক্ষার দীর্ঘমেয়াদী চাহিদা মেটাতেও সাহায্য করবে। প্রস্তাবগুলো হলো: প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির জন্য দেশগুলোকে তাদের জাতীয় বাজেট ঘাটতির সীমা বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া; প্রতিরক্ষা বিনিয়োগের জন্য ১৫০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ প্রদান যা গোটা ইউরোপের বিমান প্রতিরক্ষা, সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ, যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করাসহ নানা কাজে ব্যবহার করা হবে এবং কম উন্নত এলাকাগুলোর উন্নয়নের জন্য অর্থ ব্যয়ের অনুমতি দেওয়া।
ভন ডার লিয়েনের মতে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা খাতে মোট ৮০০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করার সুযোগ তৈরি হবে। এই পরিকল্পনা দ্রুত কার্যকর করার পক্ষে অনেক ইউরোপীয় নেতারাই মত দিয়েছেন।সম্মেলনের আগে ইইউকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বলেছেন, আমরা অনেক কৃতজ্ঞ যে আমরা একা নই।
জেলেনস্কি আরও বলেছেন, বিশ্বব্যবস্থা ধ্বংস করতে রাশিয়াকে সাহায্য করছেন ট্রাম্প। একই কথা বলেছেন ব্রিট্রেনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত।
এদিকে ইইউকে হুমকি দিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনে ইইউ সেনাদের উপস্থিতির অর্থ হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ। এ বিষয়ে কোনো আপস হবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ম্যাঁক্রোর পরিকল্পনা রাশিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করে এর সমালোচনাও করেছেন ল্যাভরভ। এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ফ্রান্স চায় ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।
দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ফ্রান্স চায় ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনে ইইউ সেনাদের উপস্থিতির অর্থ হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, ইউরোপ স্পষ্টতই একটি হুমকির সম্মুখীন। আমাদের জীবদ্দশায় যা আগে কখনও দেখা যায়নি।