
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » ইরান আর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে তেহরান জ্বলবে: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইরান আর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে তেহরান জ্বলবে: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ আজ শনিবার ইরানকে নতুন হামলার নিয়ে হুঁশিয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরান যদি ইসরায়েলে আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তবে পাল্টা হামলা চালিয়ে তেহরানকে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাৎজকে উদ্ধৃত করে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের স্বৈরশাসক দেশটির সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। তিনি এমন পরিস্থিতি তৈরি করছেন, যার জন্য ইসরায়েলের সাধারণ মানুষদের — বিশেষ করে তেহরানের বাসিন্দাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি (আয়াতুল্লা আলী) খামেনি ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তবে ইরান জ্বলেপুড়ে যাবে।’জর্ডানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ইরবিদে আকাশ থেকে পড়া বিস্ফোরক বস্তুর আঘাতে দুজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরুর পর জর্ডানে প্রথমবারের মতো কেউ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটল। আজ শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়। খবর সিএনএনের।
জর্ডানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আল-মামলাকা টিভিতে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরক বস্তুর আঘাতে একটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার জর্ডান সেনাবাহিনী জানায়, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন হতে দেবে না।
জর্ডান সশস্ত্র বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ওই দিন দেশটির আকাশসীমায় প্রবেশ করা একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ড্রোনগুলো ধ্বংস করা হয়।
জর্ডানের সঙ্গে ইসরায়েলের দীর্ঘ সীমানা রয়েছে। গতকাল ভোররাতে ইরানে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির মূলকেন্দ্র ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের হামলার নিশানা করা হয়। জবাবে ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায়।
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পরপরই জর্ডান গতকাল সাময়িকভাবে তার আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে আজ শনিবার সকালে ফ্লাইট চলাচল আবার শুরু হয়েছে বলে সিএনএনকে জানিয়েছে দেশটির বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষ।ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা হামলা এখনই থামছে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন এক ইরানি কর্মকর্তা। জ্যেষ্ঠ এক সামরিক কর্মকর্তার বরাতে ইরানের বার্তা সংস্থা ফারস এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
ফারস ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি। তিনি বলেছেন, ‘গতরাতের সীমিত পদক্ষেপে এই সংঘাত শেষ হচ্ছে না। ইরানের হামলা চলতেই থাকবে এবং এ প্রতিক্রিয়া আগ্রাসনকারীদের জন্য অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ও পরিতাপের হবে।’
গতকাল শুক্রবার ভোররাতে ইরানে বড় আকারে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে আজ শনিবার ভোররাতে (গতকাল দিবাগত রাত) পাল্টা হামলা চালায় ইরান। দুই দেশই রাতে একে অপরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে।আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে বিনা শাস্তিতে যে পার পাওয়া যায় না, তা ইরান প্রমাণ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল রিশেক। আজ শনিবার ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলার পর তিনি এ কথা বলেন। আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে আজ শনিবার ভোররাতে (শুক্রবার দিবাগত রাত) ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে পাল্টা হামলা চালায় তেহরান।
পাল্টাপাল্টি এ হামলার বিষয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতা রিশেক একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
হামাসের আনুষ্ঠানিক টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে বিবৃতিটি শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে রিশেক বলেন, ‘ইসরায়েলকে শক্ত জবাব দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইরান প্রমাণ করেছে, কোনো ঔদ্ধত্যই বিনা জবাবে পার পায় না, কোনো আগ্রাসনই শাস্তি ছাড়া পার পায় না।’
রিশেক আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যত উচ্চ ধারণাই থাকুক না কেন, ডজন ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ঠিকই ভূখণ্ডটির ভেতরে ঢুকে সফলভাবে লক্ষ্যভেদ করেছে।’
হামাসের এ নেতা মনে করেন, ইসরায়েলকে জবাব দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইরান একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। আর তা হলো—যে–ই হামলা করুক, তাকে মূল্য চুকাতে হবেইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলাকে কেন্দ্র করে নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল জর্ডান। তবে সেটি এখন খুলে দেওয়া হয়েছে।
জর্ডানের বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে আকাশসীমা আবার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ফ্লাইট স্থগিত করার একদিন পর জর্ডানের বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দিল।
জর্ডান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-মোমানি বলেন, দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে দেওয়া হবে না। জর্ডান কোনো সংঘাতের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে না।ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন দূত মাইক হাকাবি শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত পাঁচবার নিরাপদ জায়গায় সরেছেন। ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে বার বার জায়গা বদল করেছেন তিনি । সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকতে হয়েছে তাঁকে। খবর সিএনএন–এর।
আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলে অবস্থানরত হাকাবি এসব কথা বলেছেন।
এক্স পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ইসরায়েলে এক কঠিন রাত কাটল।’প্রতি শনিবার ইহুদিদের সাপ্তাহিক বিশ্রামের দিনটিকে শাব্বাত নামে ডাকা হয়ে থাকে। হাকাবি বলেন, ‘শাব্বাত সাধারণত শান্তিপূর্ণভাবে কাটে, কিন্তু এবার সম্ভবত তা হবে না।’
ইরানে ইসরায়েলের হামলার দুই দিন আগে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত অনেক কর্মীকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। যেসব কর্মী জরুরি কাজে নিযুক্ত নন তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আজ শনিবার ভোরে এসব হামলা চালানো হয়। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রাণকেন্দ্র ও দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। এ ঘটনার পরই ইরান পাল্টা জবাব দেয়।
ইসরায়েল এসব হামলায় যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি আগে থেকে ইরানে চোরাপথে প্রবেশ করানো ড্রোনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। এসব হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের দূত বলেছেন, এসব হামলায় মোট ৭৮ জন নিহত এবং ৩২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির আরও কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই এই ব্যাপক হামলা চালানো জরুরি ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামলার আগে তেহরান এমন কোনো অস্ত্র তৈরির চেষ্টায় সক্রিয় ছিল না।
ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রথমে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এরপর ইসরায়েলের দিকে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এই হামলা চলাকালে জেরুজালেম ও তেল আবিবের আকাশ অন্ধকারের মধ্যেও বিস্ফোরণের আলোয় ঝলমল করে ওঠে এবং নিচের ভবনগুলো কেঁপে ওঠে।
হামলাকে কেন্দ্র করে সাধারণ নাগরিকদের কয়েক ঘণ্টা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের আহ্বান জানায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।