শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » ভুটান বাংলাদেশের প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ : প্রধান উপদেষ্টা
ভুটান বাংলাদেশের প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ : প্রধান উপদেষ্টা
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে অভিন্ন ও দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে তোলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল অগ্রাধিকার।শনিবার (২২ নভেম্বর) ঢাকায় সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
এদিন দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তারা। উভয় নেতা বাণিজ্য, জ্বালানি, শিক্ষা, পর্যটন, ইন্টারনেট সহযোগিতা, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, পানিসম্পদ, বিনিয়োগ এবং বিমান চলাচলসহ বাংলাদেশ-ভুটান সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে শনিবার বিকাল সোয়া ৩টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পৌঁছান। নেতারা প্রথমে ৩০ মিনিটের বৈঠক করেন, তারপরে প্রায় এক ঘন্টা আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেন।
ভুটানকে ‘বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য ঢাকার দৃষ্টিভঙ্গি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভূগোল এবং প্রকৃতি আমাদের একত্রিত করেছে। আমাদের লক্ষ্য একসঙ্গে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বলেন, ‘ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে উষ্ণ ও চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’ তিনি বাংলাদেশকে ভুটানের ‘আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের’ উৎস হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, মধ্যযুগে বাংলাদেশি সন্ন্যাসীরা হিমালয় অঞ্চলে বৌদ্ধধর্ম নিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আপনাদের এই সফর এই অভিন্ন ভবিষ্যতের জন্য একটি বিল্ডিং ব্লক হবে। তিনি ভুটানকে বিশ্বের প্রথম কার্বন নেগেটিভ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী তোবগের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেন।
সফররত প্রধানমন্ত্রী গভীর বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, যদি আমাদের উন্নতি করতে হয়, তবে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।
উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছে। বাংলাদেশ ও ভুটান এর আগে ২০২০ সালে একটি অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সম্পাদিত হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী তোবগে বলেন, “থিম্পু ‘যত দ্রুত সম্ভব’ এফটিএ সই করতে চায় এবং আশা প্রকাশ করে ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করা প্রথম দেশ হিসেবে পরিণত হবে।”
তিনি আরও বলেন, এফটিএ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে।
প্রধান উপদেষ্টা ভুটানে পণ্য চলাচল সহজতর করার বিষয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুটানের কন্টেইনার ছাড় করার জন্য তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুই দেশ দ্বিমুখী পর্যটনের প্রসারে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনেও সম্মত হয়েছে। বাংলার বৌদ্ধ ভিক্ষুদের অবদানের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি আশা করছেন আরও ভুটানের পর্যটকদের বাংলাদেশের বৌদ্ধ ঐতিহ্য অন্বেষণ করতে দেখবেন।
প্রফেসর ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নীলফামারিতে একটি এক হাজার শয্যার হাসপাতাল এবং একটি মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ করছে এবং ভুটানের নাগরিকদের আসন্ন সুবিধাটিতে স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়— একটি স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের বাণিজ্য সম্পর্কে। উভয় নেতা চুক্তি সই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, আরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন ভুটানে, বিশেষ করে হিমালয়ের রাজ্যে উন্নয়নাধীন আসন্ন নতুন অর্থনৈতিক শহর গেলেফুতে কাজ করতে সক্ষম হবেন। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ চুক্তির আওতায় ভুটান বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানি করবে।
বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ঢাকা আশা করে। এই রফতানি ভুটানের ডিজিটাল কানেক্টিভিটি জোরদার করবে এবং ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে আনবে।
দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বুয়েটে নির্ধারিত আসন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুটানের শীর্ষ চিকিৎসকদের অনেকেই বাংলাদেশের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
প্রধানমন্ত্রী তোবগে বলেন, ভুটান একটি প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি গড়ে তুলছে এবং ভুটানের কার্গো লোড ও আনলোডের জন্য নারায়ণগঞ্জে জায়গাসহ বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেছে।
উভয় নেতা ভুটান থেকে বাংলাদেশের জলবিদ্যুৎ আমদানির সম্ভাবনা এবং বিদ্যুৎ বাণিজ্য সহজতর করতে ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী তোবগে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ‘উচ্চ লক্ষ্য পূরণ’ এবং ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ নিশ্চিত করার জন্য অভিনন্দন জানান।
ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে আজ সকালে যখন প্রধান উপদেষ্টা নিজে বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়েছিলেন তখন তিনি কতটা ‘অত্যন্ত আনন্দিত’ এবং মর্মস্পর্শী ছিলেন। নিউ ইয়র্ক, দাভোস, বাকু ও ব্যাঙ্ককে তাদের আলাপচারিতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যেব উপস্থিত ছিলেন।




সন্ধ্যায় ঢাকায় দুবার ভূমিকম্প অনুভূত, ভূমিকম্পের সময় কী করবেন, কী করবেন না
বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে :জাতিসংঘ
পাকিস্তানের নির্দেশেই শেখ হাসিনার রায় হয়েছে: শুভেন্দু
গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের জাতিসংঘের সমর্থন
লিবিয়া উপকূলে ১০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে নৌকাডুবি, ২৬ বাংলাদেশী ৪ লাশ উদ্ধার
কপ৩০’র পাশেই বিকল্প জলবায়ু সম্মেলন
কপ৩০ সম্মেলনে অতিরিক্ত ব্যয়ভারে আসতে পারেননি অসংখ্য প্রতিনিধি
কপ৩০ সম্মেলন হোটেলে জায়গা নেই, জাহাজে থাকছেন অতিথিরা
বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জামায়াতসহ ৮ দলের 