সোমবার, ২০ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » অস্ট্রেলিয়া | পরিবেশ ও জলবায়ু | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » সম্পর্ক ‘উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া
সম্পর্ক ‘উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া
বিবিসি২৪নিউজ,কূটনৈতিক প্রতিবেদক ঢাকা: বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ‘উন্নয়ন অংশীদারের’ পর্যায় থেকে ‘সামগ্রীক অংশীদারের’ দিকে যাচ্ছে। এই সামগ্রীক অংশীদার সম্পর্কের মধ্যে যেমন বাণিজ্য রয়েছে, তেমনি রয়েছে নিরাপত্তা ও অন্যান্য কৌশলগত বিষয়। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গতিশীল ও নতুন উচ্চতায় নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং। তিন দশক পরে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রথমবারের মতো কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকা আসছেন। এই সফরে দুই দেশের সম্ভাবনাময় জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে দুই সরকারের মধ্যে।
এ সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পেনি ওং। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গেও বৈঠক করবেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর বুধবার (২২ মে) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজার যাবেন পেনি ওং।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করার আগ্রহ দুই দেশেরই আছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৪০০ কোটি ডলার, যা দ্রুততম সময়ে দ্বিগুণ করা সম্ভব।’
দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক আগের যেকোনও সময়ের থেকে অনেক বেশি– এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষই সম্পর্ককে নতুন একটি রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে যেখানে কৌশলগত উপাদানও থাকবে।’
বাংলাদেশ কী চায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি সহযোগিতা, দক্ষতা বৃদ্ধি, অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রেরণ, নিরাপত্তা সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য বিষয় রয়েছে।’
অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় বাজার হিসাবে বিবেচনা করে অস্ট্রেলিয়া এবং বাণিজ্য ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী বলে তিনি জানান।
সম্ভাবনাময় খাত
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ প্রধানত তৈরি পোশাক শিল্প রফতানি করে। ২০০৩ থেকে অস্ট্রেলিয়া শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও গত এক দশক ধরে সেখানে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রধানত লোহা ও খনিজ পদার্থ ও কৃষিপণ্য আমদানি করে থাকে।
এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য রফতানি খাত হচ্ছে জ্বালানি। দেশটিতে প্রচুর পরিমাণ এলএনজি ও কয়লা মজুত আছে। কিন্তু বাংলাদেশ ওই দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করে না।’
বাংলাদেশ তার জ্বালানির জন্য প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানি সংগ্রহের বিকল্প একটি উৎস হিসেবে অস্ট্রেলিয়া একটি নির্ভরযোগ্য দেশ হতে পারে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যদি অস্থিরতা দেখা দেয় তাহলে বিকল্প উৎস থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন মেগা ও অন্যান্য প্রকল্পে এবং নির্মাণ শিল্পে প্রচুর পরিমাণ লোহা ও খনিজ পদার্থ যেমন জিংক বা কপারের মতো জিনিসের দরকার পড়ে। এ ধরনের খনিজ পদার্থ সরবরাহকারী দেশ অত্যন্ত কম, যেমন রাশিয়া, ব্রাজিল বা ভারত। এ ধরনের খনিজ পদার্থ আমদানির একটি উৎস হিসাবে অস্ট্রেলিয়াকে বেছে নিলে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার উল পৃথিবী বিখ্যাত। তারা ওই পণ্য বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। আবার সেটি প্রক্রিয়াজাত করে তার একটি বড় অংশ নিজ দেশে নিয়ে যায় উলজাতীয় পণ্য বানানোর জন্য। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প অনেক পরিপক্ব এবং দুই দেশের মধ্যে উল প্রক্রিয়াজাত খাতে সহযোগিতা সম্ভব বলে তিনি জানান।
কৌশলগত সহযোগিতা
নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতার আগ্রহ রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। ২০২১ সালে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়া তাদের দূতাবাসে ডিফেন্স অ্যাটাশে নিয়োগ দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক এক কূটনীতিক জানান, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই নিয়ে আলোচনা চলছে।’
বাংলাদেশের ফোর্সেস গোল ২০৩০ অনুযায়ী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া একটি ভালো উৎস হতে পারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা অস্ট্রেলিয়া সফর করেছেন বলে তিনি জানান।
অস্ট্রেলিয়ার আগ্রহের জায়গা হচ্ছে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সমমনা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়ানো এবং বাংলাদেশের নীতি তাদের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এক্ষেত্রে দুই পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে উভয়ের জন্য লাভজনক এমন একটি সমঝোতায় উপনিত হতে পারে বলে তিনি জানান।
ডিকাপলিং চায়না
পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীন এবং অস্ট্রেলিয়া এক ব্যতিক্রম নয়। চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য ভারত মহাসাগর এবং অন্যান্য অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায় অস্ট্রেলিয়া।
এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘চীনের ওপর নির্ভরশীলতা পুরোপুরি কমানো বাস্তবে অসম্ভব। কিন্তু নির্ভরতার পরিমান গ্রহণযোগ্য স্তরে নিয়ে আসা সম্ভব যদি অস্ট্রেলিয়া যেসব পণ্য রফতানি করে সেগুলোকে বাংলাদেশ বা এধরনের অনেকগুলো দেশে অস্ট্রেলিয়া রফতানি করতে পারে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক যোগাযো্গ রক্ষা করার এটিও একটি কারণ বলে তিনি জানান।




ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম আবারও চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশ থেকেই ভিসা ইস্যু করবে অস্ট্রেলিয়া
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অস্ট্রেলিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, দুই বিদেশি পর্যটকসহ নিহত ৩
অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে বিশাল অঞ্চল
নিউ জিল্যান্ডসহ আরো ১০ মিশন খুলছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের বন্যার্তদের জন্য ১০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তা
ভ্রমণের জন্য পাঁচ বছরের ভিসা চালু করছে চীন-অস্ট্রেলিয়া
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারালো অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং ঢাকায় এসেছেন 