
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » বাইডেনই হারিয়ে দেন কমলা হ্যারিসকে
বাইডেনই হারিয়ে দেন কমলা হ্যারিসকে
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান কমলা হ্যারিস। এ হারের পেছনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দায় দেখেন কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের শীর্ষ উপদেষ্টা ডেভিড প্লাফ। নতুন একটি বইতে প্লাফ তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেছেন। বইটির নাম অরিজিনাল সিন: প্রেসিডেন্ট বাইডেন’স ডেকলাইন, ইটস কভার-আপ, অ্যান্ড হিজ ডিজাস্টারাস চয়েস টু রান এগেইন। বইটির লেখক সিএনএনের প্রধান ওয়াশিংটন সংবাদদাতা জ্যাক ট্যাপার এবং অ্যাক্সিওসের জাতীয় রাজনৈতিক প্রতিবেদক অ্যালেক্স থম্পসন।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও হোয়াইট হাউস ঘিরে কথিত এক ষড়যন্ত্র নিয়ে আসা বহু প্রতীক্ষিত বইগুলোর একটি হচ্ছে অরিজিনাল সিন।
বইটিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলা হ্যারিসের ১০৭ দিনের নির্বাচনী লড়াইয়ের বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। এ বিষয়ে প্লাফ বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলার লড়াই ছিল একটা বিশাল দুঃস্বপ্ন। তিনি এ জন্য বাইডেনকে দায়ী করে বলেন, নির্বাচনী লড়াই থেকে বাইডেন দেরিতে সরে গিয়ে কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে দেন।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিজেই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই সময় ক্ষমতায় থাকা জো বাইডেন। তাঁর পুনর্নির্বাচনের বিষয়টিকে দায়ী করেন প্লাফ। তিনি বলেন, সব দোষ বাইডেনের। তিনি পুরো ব্যাপারটা নষ্ট করে দেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ব্যর্থতার পর তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বাইডেন নির্বাচন থেকে সরেননি। তাঁর বয়স ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তখন। এসব নিয়েই ক্ষোভ জানান প্লাফ।
ওবামার আরও কয়েকজন সাবেক উপদেষ্টার মতো বাইডেনের সমালোচক ছিলেন প্লাফ। নির্বাচনে পরাজয়ের পর এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে তিনি বলেন, হ্যারিস প্রচার শুরু করেছিল একটা গভীর খাদ থেকে। পরে অবশ্য তিনি অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেন।বইয়ে বলা হয়েছে, প্লাফকে কিছু ডোনার ফোন করে বাইডেনের শারীরিক সক্ষমতা, মনঃসংযোগ ও বক্তৃতাদানের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বইটির লেখকদ্বয় প্রায় ২০০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেস সদস্য, হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা, প্রচারকর্মী ও ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টারা রয়েছেন। অনেকে আগেই বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে সতর্ক করছিলেন বলে জানান।
একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী, যিনি মনে করতেন বাইডেনের আর নির্বাচন করা উচিত নয় এবং সে কারণেই হোয়াইট হাউস ছাড়েন, বইয়ের লেখকদের বলেন, ‘আমরা তাঁকে এমনভাবে আড়াল করতাম, যাতে তাঁর নিজের স্টাফরাও বুঝতে না পারেন ২০২৩ সাল থেকেই তাঁর শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা কতটা বাড়ছিল।’
একজন প্রভাবশালী ডেমোক্রেটিক কৌশলবিদ বাইডেনের নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্তকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, ‘ওটা ছিল একধরনের নৃশংসতা। তিনি নির্বাচনী সুযোগ ছিনিয়ে নিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির কাছ থেকেও, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছ থেকেও।’
৮২ বছর বয়সী বাইডেন বইটি প্রকাশের আগেই এর কিছু তথ্যকে আগেভাগে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেন। গত সপ্তাহে তিনি বিবিসি রেডিও ৪-এর ‘টুডে’ প্রোগ্রাম এবং এবিসির টকশো ‘দ্য ভিউ’তে অংশ নেন। পাশাপাশি নিজের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে তিনি চুক্তি করেছেন ক্রিয়েটিভ আর্টিস্টস এজেন্সির সঙ্গে এবং নিয়োগ দিয়েছেন যোগাযোগ-বিশেষজ্ঞ ক্রিস মিয়ারকে।
অরিজিনাল সিন বইটিতে আরও বলা হয়েছে, বাইডেনকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি নানা রকম হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছিলেন। ২০২৩ সালে ওবামা হোয়াইট হাউসে গিয়ে বাইডেনকে সতর্ক করে বলেন, ‘শুধু নিশ্চিত হও, তুমি যেন এই নির্বাচনে জিততে পারো।’