
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | শিরোনাম | সাবলিড » ইরানে হামলায় এ পর্যন্ত নিহত ৪৩০, আহত ৪০০০ : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ইরানে হামলায় এ পর্যন্ত নিহত ৪৩০, আহত ৪০০০ : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের সঙ্গে গত ১৩ জুন সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইরানে অন্তত ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ হাজার মানুষ। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে স্থানীয় নূর নিউজ এজেন্সি হতাহতের হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
ইরানের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিনের মধ্যে নিহতের সংখ্যা নিয়ে এই প্রথম সরকারি তথ্য প্রকাশ করা হলো।
সর্বশেষ গত রোববার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইসরায়েলি হামলায় দেশটিতে মোট ২২৪ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অধিকার সংগঠনের সংবাদমাধ্যম হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি বলেছে , নিহতের সংখ্যা ৬৫৭ জন।ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মাদরেজা জাফরঘান্দি বলেছেন, চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি বাহিনী দেশটির ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স এবং তিনটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় দুজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং এক শিশু নিহত হয়েছেন। ইরানের ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাতে আল–জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১৩ জুন সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেশটিতে ২৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বিরসেবা শহরের সোরোকা হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের দেওয়া তথ্যের বরাতে আল–জাজিরাজানায়, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সোরোকা হাসপাতালের ছাদের একাংশ ধসে পড়েছে। সেই সঙ্গে ভেঙে গেছে হাসপাতাল ভবনের বাইরের দেওয়ালের কাঁচ।ইরানের খোররামাবাদ শহরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ইরানের অভিজাত ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ কথা জানিয়েছে। খবর আল–জাজিরার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নউর জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১৫ জন কর্মকর্তা ও সেনা নিহত হয়েছেন।
গত ১৩ জুন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। তখন থেকেই ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক আর সামরিক স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে ইরানের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক নেতা ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশনসহ ইরানের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।বিভিন্ন স্থানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাকে ফাঁকি দিয়ে তেল আবিব শহরের প্রাণকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে বলে দাবি করেছে তেহরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইসরায়েলের অধিকৃত অঞ্চলের ভেতরে সামরিক ও সরবরাহ ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে বড় পরিসরের হামলা চালিয়েছে।
তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে। একই সঙ্গে একাধিক জায়গায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।ইসরায়েলের টিভি চ্যানেল ১২ ও দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ইরান থেকে আজ সকালে ১০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, যার মধ্যে ৫টি নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়েছে।
একটি ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের দক্ষিণের হোলন শহরে আঘাত হানে বলে খবর পাওয়া যায়। হামলায় সেখানে একটি বহুতল ভবনে আগুন ধরে যায় এবং সেটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পাল্টা হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল তাদের নতুন ‘লাইটনিং’ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বসাতে শুরু করেছে। ইরানি ড্রোন ঠেকাতে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহৃত হবে।
জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ইরানে ইসরায়েলের হামলার এক সপ্তাহ পার হলেও তেহরানে সরকারের কোনো অস্থিরতা দেখা যায়নি; বরং তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।
এই হামলা ছিল ইরানের ১৮তম পাল্টা হামলা। এসব হামলা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেহরান দীর্ঘ মেয়াদে চাপ বজায় রাখতে ও আরও বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত, যতক্ষণ না কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে তারা মনে করে।