সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » আনন্দ-বিনোদন | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » শাহরুখ খানের জন্মদিন : গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
শাহরুখ খানের জন্মদিন : গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
বিবিসি২৪নিউজ,বিনোদন ডেস্ক: এ বছর শাহরুখ খানের জন্মদিনটা ভিন্নভাবে উদ্যাপিত হয়েছে এটা বলা যায়। রোববার যখন এই মেগাস্টার ৬০ বছরে পা দিলেন, তখন তিনি শুধু বলিউডের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ‘বাদশা’ হিসেবেই নয়, বরং একজন বিলিয়নিয়ার হিসেবে সর্বকালের সবচেয়ে ধনী ভারতীয় অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত হবেন।
হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট অনুযায়ী, খান গত অক্টোবরেই বিলিয়নিয়ার স্তরে পৌঁছান, যা তাঁকে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.০০০০৪ শতাংশের অন্তর্ভুক্ত এক অভিজাত শ্রেণিতে নিয়ে যায়। ভারতের ৩৫৮ জন বিলিয়নিয়ারের মধ্যে তিনি একজন, যা ভারতের মোট জনসংখ্যার ০.০০০০২ শতাংশ। তাঁকে নিয়ে মানুষের দেবতার মতো আচরণ করার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।
সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয়, ভারতের মূলধারার মিডিয়া তাঁর এই অর্জনকে উদ্যাপন করেছে—তার নিরলস পরিশ্রম, অনন্য প্রতিভা, ক্যারিশমা এবং ব্যবসায়িক দক্ষতার প্রশংসায়, যা তাঁকে রিয়েল এস্টেট, স্পোর্টস ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্টে বিস্তৃত বহুবিধ পোর্টফোলিও গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
‘এই অর্জন…বহু বছরের অবিরাম পরিশ্রমকে মুকুট পরিয়েছে…তাঁর ব্র্যান্ডকে পরিণত করেছে একটি শক্তিশালী সম্পদ-ইঞ্জিনে’, লিখেছে ইন্ডিয়া টুডে। হিন্দুস্তান টাইমস যুক্তি দিয়েছে: ‘শাহরুখ খানের বিলিয়নিয়ার ক্লাবে প্রবেশ—মাথা এবং হৃদয়—উভয়ের কাছেই সম্পূর্ণ অর্থবহ।’
একইভাবে ইকোনমিক টাইমস মন্তব্য করেছে: ‘তাঁর যাত্রা প্রমাণ করে, প্রতিভা, পরিশ্রম এবং স্মার্ট বিনিয়োগ পর্দার ভেতরে এবং বাইরে—উভয় জায়গায়—স্থায়ী উত্তরাধিকার তৈরি করতে পারে।’
কিন্তু খুব কম লোকই ভেবেছে—২০২৫ সালে বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী?
গত বছর গবেষকেরা সতর্ক করেছিলেন একটি ভারতে বৈষম্য ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের চেয়েও খারাপ অবস্থায় রয়েছে; যেখানে মধ্যবিত্তের সুযোগ-সুবিধা ভেঙে পড়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং যেখানে তাঁর (শাহরুখ খান) মতো মুসলমান পরিচয়ের মানুষেরা ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি।
আরেকটি প্রশ্ন এর ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকে: ভারত, গাজা বা কাশ্মীরে সামাজিক-রাজনৈতিক উথালপাতালের মুখে শাহরুখের নীরবতা—তাঁর সম্পদ বৃদ্ধিতে কি ভূমিকা রেখেছে? আসলেই, এমন সময়ে বিলিয়নিয়ার হওয়া শাহরুখ খান সম্পর্কে কী বলে?
শাহরুখের সম্পদের গল্প
খানের উত্থান বুঝতে হলে, শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী ভারতের ইতিহাস দেখতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সমাজে হিন্দু জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়, আর হিন্দি জনপ্রিয় সিনেমা বিনা সংকোচে বহুজাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি আকাঙ্ক্ষিত ভারতের স্বপ্ন তৈরি করে।
শাহরুখ খান হয়ে ওঠেন এক সেতু—সংরক্ষণশীল অতীত থেকে মুক্ত বাজারের ভবিষ্যতের দিকে। সবকিছুই দেখতে নির্দোষ মনে হতে পারে। স্বজনপ্রীতির ওপর দাঁড়ানো একটি ইন্ডাস্ট্রিতে বহিরাগত হিসেবে তাঁর সাফল্য অনেকের জন্য আশার গল্প হয়ে ওঠে।
যেখানে ট্রিকল-ডাউন (চুইয়ে পড়া) অর্থনীতি ছিল এক প্রতারণা, সেখানে বোম্বেতে শাহরুখ খানের উত্থান মানুষকে ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস রাখতে এবং ‘ইন্ডিয়া’ ধারণাকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করেছিল।
হিন্দু জাতীয়তাবাদ যখন ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন রাজ, রাহুল এবং পরবর্তী সময়ে বীর—তাঁর জনপ্রিয় চলচ্চিত্র চরিত্রগুলো—দক্ষতার সঙ্গে বর্ণ-ধর্মীয় বিভাজনকে আড়াল করেছিল এবং অসমতাকে রাজনৈতিক প্রশ্ন নয়, বরং ব্যক্তিগত সামর্থ্যের প্রশ্নে রূপ দিয়েছিল।
তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের সাফল্যের প্রতীক। এটি সাধারণ মানুষকে নিশ্চিত করেছিল—তারা চাইলে সাফল্য পেতে পারে, আধুনিক হতে পারে এবং ভারতীয় হতে পারে।
একজন বিনোদন সাংবাদিক ২০২৩ সালে ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘তাঁর (শাহরুখ) ব্যক্তিগত জীবন “ইন্ডিয়া”র ধারণার প্রতিচ্ছবি। তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু দেশে একজন মুসলমান, হিন্দু নারীকে বিয়ে করেছেন এবং তাঁর সন্তানেরা তাঁদের ইচ্ছামতো ধর্ম গ্রহণ করে বড় হচ্ছেন।’
কিন্তু আসলে তিনি যা ছিলেন—এটি তার চলচ্চিত্রেও দেখা যায়—তিনি ছিলেন মুসলমানের একটি নিরাপদ রূপ, এমন এক চরিত্র, যা হিন্দু রাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করে যে ভারতের ভূখণ্ডে মুসলমান হওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য উপায় আছে: ভদ্র, রাষ্ট্র-অনুগত, ভোক্তাবান্ধব দেশপ্রেমিক।
ডানপন্থীরা তাঁকে ঘৃণা করলেও তাঁর বিনয়ী আনুগত্য এবং ‘মুসলিম সোশ্যাল’ চরিত্রে অভিনয়ের প্রবণতা—যেখানে মুসলমানিত্ব সীমাবদ্ধ থাকে পোশাক, রুচি এবং ভদ্রতায়—ভারতের উদার লিবারেলদের সুযোগ দেয় নিজেদের সহনশীল ও প্রগতিশীল ভাবতে। তাঁরা দেখতে চান না—মুসলমানদের প্রতি তাঁদের নিজেদের বিশ্বস্ততার দাবি। যখন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে হিন্দুত্ব রাষ্ট্রশক্তিতে রূপ নেয়, বৃহৎ করপোরেশনদের সঙ্গে একাকার হয়ে—তখন শাহরুখ খান তাঁর অসাধারণ সাফল্যের ফাঁদে আটকা পড়ে গেছেন।
ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে, ইসরায়েলি কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে—ভাগ করা, নিয়ন্ত্রণ এবং দমন করার জন্য এবং নতুন নীতিতে উপত্যকার জনসংখ্যাগত গঠন পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। যখন ভারত মুসলমানদের জন্য নরকে পরিণত হয়েছে, শাহরুখের নীরবতা আরও গভীর হয়েছে।
নীরবতা, সহায়তা আর খলনায়কত্ব
২০১৫ সালে, মোদি ক্ষমতায় আসার এক বছর পর এবং ঘৃণা যখন প্রকাশ্যে দেখা দিতে শুরু করেছে, তখন শাহরুখ খান দেশে ‘অসহিষ্ণুতা বাড়ছে’ বলে সামান্য মন্তব্য করেছিলেন। সেই মানুষ, যার সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে তিনি শ্রেণি, ধর্ম, জাত, ভাষা ও ভৌগোলিক সীমা অতিক্রম করে উঠেছেন, তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো—আসলে তিনি শুধু একজন ভারতীয় মুসলমান।
বেশি সময় লাগেনি বাস্তবতা স্পষ্ট হতে—তাঁর সম্পদ নির্ভর করছে এই সক্ষমতার ওপর যে তিনি মনোযোগী, নতজানু, বাধ্য মুসলিম শিল্পী হয়ে থাকতে পারেন কি না। এটি ছিল একটি ফাউস্টিয়ান চুক্তি, যা শেষ পর্যন্ত তাঁর জন্য খুবই লাভজনক হয়ে ওঠে।
শাহরুখের প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট ক্রমাগত বড় হতে থাকে। তাঁর ক্রিকেট দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সহ-স্বত্বাধিকারী জুহি চাওলা, যিনি মোদির মুসলমানবিরোধী নীতির কিছু বিষয়ে সমর্থন দিয়েছেন। তাঁদের দল আইপিএলের সবচেয়ে আইকনিক এবং সবচেয়ে লাভজনক দলগুলোর একটি হয়ে ওঠে।
২০১৫ সালের পর কয়েক বছর খান কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি—যে সময়টিকে ‘কঠিন সময়’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তারপরও তিনি ভারতের ভোক্তা জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে স্থাপন করার নতুন পথ খুঁজে পান। ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্টের ক্ষেত্রে শাহরুখ খান এখনো সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন মুখ। খান পরিবারের উপস্থিতি দেখা যায় কো-ওয়ার্কিং স্পেস থেকে শুরু করে আর্থিক সেবাতেও।
তিনি তিন ডজনের বেশি পণ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর—যার অনেকগুলোই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত অথবা ফিলিস্তিন দখলে ভূমিকা রাখার কারণে বয়কট তালিকায় আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় কনগ্লোমারেট টাটা এবং রিলায়েন্স—যাদের ইসরায়েলের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হুন্দাই, যার যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয় ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ভাঙতে।
খান ক্যাস্ট্রল অয়েলেরও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এই অটোমোটিভ অয়েল ও লুব্রিকেন্ট কোম্পানির মালিক ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম (বিপি), যাকে গত মার্চে ইসরায়েল ভূমধ্যসাগরে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের লাইসেন্স দিয়েছে।
এ কথা বাড়িয়ে বলা হবে না যে খান অনেক আগেই শুধু অভিনেতা নন। তিনি কেবল একটি ব্র্যান্ডও নন। তিনি একটি সাম্রাজ্য। আর অন্য বিলিয়নিয়ারের মতো, তিনি তাঁর ভাবমূর্তি ধোয়ার জন্য দান-খয়রাতকে ব্যবহার করেন—অ্যাসিড-অ্যাটাক বেঁচে যাওয়া নারীদের সহায়তা, শিশুদের সাক্ষরতা বৃদ্ধি এবং শিশুস্বাস্থ্যসেবাকে সমর্থন করে।
ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস আগস্টে লিখেছিল, ‘তাঁকে ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পের ওয়ারেন বাফেট বলা সম্পূর্ণ ভুল হবে না।’ কিন্তু ভক্তরা যখন এখনো তাঁকে তাঁর চরিত্রগুলোর মূল্যবোধ—সাধারণ মানুষ, পরিবার, আনুগত্য, ভালোবাসা—এর সঙ্গে যুক্ত করে, তিনি নিঃশব্দে তাঁদের সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে শোষণকারী শ্রেণির অংশে পরিণত হয়েছেন।
ভক্তদের মাঝে শাহরুখ খান
ভক্তদের মাঝে শাহরুখ খানছবি : রয়টার্স
গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার
আজ ভারতের মুসলমানরা দেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় বাস করছে। মোদির শাসনে ভারতীয় মুসলমানরা সামান্য সন্দেহেই লিঞ্চিংয়ের শিকার হচ্ছেন; তাঁদের নাগরিকত্ব হুমকির মুখে; বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, মিডিয়া—সব প্রতিষ্ঠানেই তাঁদের অবমূল্যায়ন ছড়িয়ে পড়েছে—এতটাই যে অনেকে এটিকে বর্ণবৈষম্যের এক রূপ বলে বর্ণনা করছেন।
ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে, ইসরায়েলি কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে—ভাগ করা, নিয়ন্ত্রণ এবং দমন করার জন্য এবং নতুন নীতিতে উপত্যকার জনসংখ্যাগত গঠন পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। যখন ভারত মুসলমানদের জন্য নরকে পরিণত হয়েছে, শাহরুখের নীরবতা আরও গভীর হয়েছে।
শাহরুখ-ভক্তরা অথবা ভারতীয় উদারপন্থীরা হয়তো তাঁর ছেলে আরিয়ান খানের হয়রানির গল্প বলবেন, অথবা দাবি করবেন তাঁর সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র পাঠান এবং জওয়ান-এ তিনি ‘নীরব বিদ্রোহ’ করেছেন। কিন্তু তাঁর নীরবতার পক্ষে এই যুক্তিগুলো প্রমাণ করে—তাঁর সাফল্য নির্ভর করে আনুগত্যের ওপর।
খান জওয়ান চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কারও জিতেছেন। এটি পরিষ্কার করে দেয়—চলচ্চিত্রটি আসলে কতটা ‘বিদ্রোহী’ ছিল। আর যখন গাজায় গণহত্যা শুরু হলো, নীরবতা আরও ঘনীভূত হলো।
ইসরায়েল যখন ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলে বোমা ফেলে পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন করছিল এবং ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের খাদ্য বিতরণকেন্দ্রে গুলি করছিল—ঠিক তখন ভারতের মুসলমান এবং অন্য কর্মীরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে পেটানো হয়েছে, আটক হয়েছে, শহরের বাইরে ফেলে আসা হয়েছে।
অন্যরা গ্রেপ্তার ও বিদ্রূপের ঝুঁকি নিয়েছিল। তাঁরা বিভিন্ন শহরে ম্যাকডোনাল্ডস ও অন্যান্য মার্কিন ফাস্ট ফুড চেইনের সামনে দাঁড়িয়ে জনগণের বিবেককে আহ্বান জানিয়েছিল যেন গাজায় হত্যাযজ্ঞে জড়িত পণ্যগুলো বয়কট করা হয়। কিন্তু খান কোথাও ছিলেন না। বরং তিনি যেন নতুন নতুন উপায়ে দেখাতে লাগলেন যে এসব বিষয়ে তাঁর কিছু যায় আসে না।
এ বছরের মে মাসে, যখন পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তুঙ্গে পৌঁছায়—শিল্পী এবং শিক্ষার্থীরা তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (যেমন জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি) অবস্থান নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল—তখন খান বেছে নিলেন অন্য পথ: নিউইয়র্কের মেট গালায় তাঁর প্রথম উপস্থিতি।
যেখানে বাইরে প্রতিবাদ হচ্ছিল, সেখানে খান লালগালিচায় উপস্থিত হলেন—ফ্যাকাশে ও শীর্ণদেহ, কিন্তু পুরোপুরি সাজানো-গোছানো: সব্যসাচীর ডিজাইন করা কালো উলের কোটে মোড়া এবং গলায় স্তরে স্তরে গয়না। ভারতীয় গণমাধ্যম আবারও পরিপ্রেক্ষিত উপেক্ষা করে তাঁর পোশাক আঁকড়ে ধরল এবং তাঁর উপস্থিতিকে বলল ‘ঐতিহাসিক’।
এরপর সেপ্টেম্বর মাসে মোদির জন্মদিনে, অনুগত খান এক্স-এ পোস্ট করলেন—‘আজ প্রধানমন্ত্রী মোদির ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আমি আমার শুভেচ্ছা জানাই। একটি ছোট শহর থেকে বৈশ্বিক মঞ্চে উঠে আসা আপনার যাত্রা খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। দেশের প্রতি আপনার শৃঙ্খলা, কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা এই যাত্রায় স্পষ্ট দেখা যায়। ৭৫ বছর বয়সেও আপনার উদ্যম আমাদের মতো যুবকদের হার মানায়। আমি প্রার্থনা করি, আপনি সব সময় সুস্থ ও সুখী থাকুন।’
শাহরুখ ছিলেন বলিউডের অনেক তারকার মধ্যে একজন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশংসায় ভাসালেন।
অক্টোবর নাগাদ, যখন তথাকথিত ‘যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা হওয়ার পর বিশ্ব পরিস্থিতি বুঝে নিতে ব্যস্ত, তখন বলিউডের তিন খান—আমির, সালমান ও শাহরুখ—সৌদি আরবে জয় ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত হলেন।
সৌদি রাজতন্ত্রের এই বার্ষিক অনুষ্ঠান—নিজেদের অপরাধ আড়াল করার জন্য তৈরি—এ তিনজন একে অপরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন এবং অতীত স্মৃতিচারণা করলেন। তাঁরা যৌথভাবে সেখানকার ধনী সৌদি রাজপরিবার এবং এলিট দর্শকদের চ্যালেঞ্জ করলেন এমন কিছু করতে, যা এত দিন কেউ করতে পারেনি (বা সামর্থ্য হয়নি): তাদের তিনজনকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণে অর্থায়ন করা।
এটি ছিল তাঁদের অগ্রাধিকার এবং সবকিছু বিক্রি করে দেওয়ার মানসিকতার আরেকটি প্রকাশ। অস্থিরতা ও বিচ্ছিন্নতার এ সময়—মৃত্যু আর ধ্বংসের ঋতুতে—শাহরুখের সম্পদ বৃদ্ধি মোটেই বিস্ময়কর নয়।
আজাদ ইসা মিডল ইস্ট আইয়ের নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটন এলাকাভিত্তিক একজন সিনিয়র রিপোর্টার। তিনি এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আল–জাজিরা ইংলিশ-এ কাজ করেছেন।




তামিলনাড়ুতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ৩৯
আমি অসহনীয়, হৃদয় ভেঙে গেছে: থালাপতি বিজয়
শিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন
শোনা যাবে না অমিতাভের ভরাট কণ্ঠ, সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের
জামিন পেলেন নুসরাত ফারিয়া
বিমানবন্দরে আটক নুসরাত ফারিয়াকে নেওয়া হচ্ছে ডিবিতে
অপু বিশ্বাস নিপুণ নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা
ভারতে পাকিস্তানি শিল্পীদের কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা
গোপন তথ্যই এবার ফাঁস করলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল 