বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বিএনপি প্রার্থীর জনসংযোগে খুন, মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি
বিএনপি প্রার্থীর জনসংযোগে খুন, মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: চট্টগ্রামে নগরে সন্ধ্যায় জনসংযোগ চলছিল বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা–কর্মীরা।
এ ঘটনা ঘটে আজ বুধবার নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায়। সেখানে তখন নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম–৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।
এ ঘটনায় এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে মারা যান জনসংযোগের বহরে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন। বাকিরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, এরশাদ উল্লাহ শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাঁর পেটে ছররা গুলি লাগে।গুলিবর্ষণের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, এরশাদ উল্লাহ নেতা–কর্মীদের নিয়ে প্রচারপত্র বিলি করতে করতে এগোচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরোয়ার হোসেনও। এ সময় হঠাৎ এক যুবক কর্মীদের ভিড়ে ঢুকে পড়ে খুব কাছ থেকে সরোয়ারের ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন। একের পর এক সাত থেকে আটটি গুলি করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও একই কথা বলেন। গুলিবর্ষণের ঘটনায় এরশাদ উল্লাহ ছাড়া আহত বাকিরা হলেন পাঁচলাইশ তিন নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইরফানুল হক ওরফে শান্ত, বিএনপি কর্মী আমিনুল হক ও মুর্তজা হক। তাঁদের মধ্যে ইরফানুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সঙ্গে সরোয়ার হোসেনের বিরোধ রয়েছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সেদিন ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান সারোয়ার।গুলিতে আহত ইরফানুল হকের খালাতো ভাই স্থানীয় ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রশিদ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের পাশে দোকানে জনসংযোগ চালানোর জন্য এরশাদ উল্লাহসহ আমরা নেতা–কর্মীরা যাই। হঠাৎ মাস্ক পরা কয়েকজন যুবক পেছন থেকে এসে আমাদের সরিয়ে দিয়ে সরোয়ারের ঘাড়ে–গলায় গুলি করে। গুলির শব্দ পেয়ে নেতা–কর্মীরা সবাই এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে দেখি মাটিতে পড়ে আছেন সরোয়ার। মৃত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নিহত সরোয়ারের ভাই আজিজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাইকে মেরে ফেলার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের লোকজন। সপ্তাহ পার না হতে ফোন করে বলা হতো যা খাবার খেয়ে নিতে। এ জন্য আমরা একটু সতর্ক ছিলাম। কিন্তু এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে নিরাপত্তা থাকবে, সে আশায় আমার ভাইসহ আমরা অংশ নিয়েছিলাম।’
সরোয়ারের ভাই আজিজ হোসেন দাবি করেন, সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী মো. রায়হানসহ কয়েকজন সরাসরি এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, খুনে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীরা জনসংযোগে আসা বিএনপির লোকজনের সঙ্গে বহরে মিশে যান। তাঁরা একটি মাইক্রোবাসে করে আসেন।
সরোয়ার এক মাস আগে বিয়ে করেন। তাঁর বিয়েতে বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায় সরোয়ারকে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির প্রার্থী গণসংযোগ করার সময় সেখানে শত শত লোক অংশ নেন। সরোয়ার সেখানে অংশ নিলে সন্ত্রাসী দুটি দলের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে তাঁকে গুলি করা হয়।পুলিশ কমিশনার যা বললেন
আহত ব্যক্তিদের ভর্তি করা হয় নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানে আজ রাতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ড যারা করতে পারে, তাদের ব্যাপারে পুলিশের অনুমান আছে। অপরাধীদের মূল টার্গেট ছিল সরোয়ার, এরশাদ উল্লাহ নয়। এ ঘটনার মূল কুশীলবদের অনেকেই জেলে আছে। অপরাধীদের শীর্ষ একজন জেলে স্ত্রীসহ আছে। তারা রিমোট (প্রত্যন্ত) এলাকায় পালিয়ে থাকে। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। কিলিং মিশনে যারা ছিল, তাদের শনাক্ত করার মতো কিছু আলামত পাওয়া গেছে। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
কমিশনার আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অ্যালার্মিং (উদ্বেগজনক)। আমি বলব, সামনে বিএনপি–জামায়াতসহ যেকোনো দল জনসভা কিংবা গণসংযোগ করার ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানাতে। পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে। এরশাদ উল্লাহ বিকেলে গণসংযোগের আগে আমার কার্যালয়ে ছিলেন। তিনি আমাকে একবারও বলেননি চালিতাতলীতে গণসংযোগ করবেন। এমনকি বায়েজিদ থানা–পুলিশও কিছু জানে না।’এলাকা থমথমে, আতঙ্ক
বুধবার রাত ১১টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী খন্দকারপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানপাট সব বন্ধ। লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় লোকজন কেউ ভয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, অন্যদিন রাত ১২টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকে। মানুষজনের চলাচল থাকে। আতঙ্কে এলকার লোকজন ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন।ঘটনাস্থলে পিবিআইয়ের লোকজন বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।




যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা, ক্ষুধায় কাতর গাজাবাসী
যুক্তরাষ্ট্রের তিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের বিপুল জয়, প্রথম পরীক্ষায় হারলেন ট্রাম্প
জলবায়ু তহবিলের ২১১০ কোটি টাকার দুর্নীতি: টিআইবি
ভারত–বাংলাদেশের ভিসা জালিয়াতি, কঠিন হচ্ছে কানাডা: সিবিসির প্রতিবেদন
শাপলা কলি’ নিচ্ছে এনসিপি, নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা
সম্রাটদের সমাধিসহ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘর চালু মিশরে
রুশ সেনাদের আক্রমণপ কঠিন পরিস্থিতির মুখে ইউক্রেন
নৌকা’ উপহার নিয়ে বিপাকে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির কী করবেন জানতে চাইলেন ফেসবুকে
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন, উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে 