ঢাকা নিউমার্কেটে দোকান খুলছে
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকান আজ বুধবার খুলছে। নিউমার্কেট দোকান সমিতির কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন এ কথা জানান।সোমবার দিবাগত রাতের পর গতকাল মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষ হয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেট এলাকার বিপণিবিতানের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের এ সংঘর্ষ হয়। এ পরিস্থিতিতে নিউমার্কেট দোকান সমিতি আজ সকালে জানিয়েছিল, দোকান খোলা হবে না। পরে পরিস্তিতি বিবেচনায় দোকান খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানালো দোকান মালিক সমিতি। দোকান মালিক সমিতির ঘোষণার পরই অনেক দোকান খুলতে দেখা গেছে।
সংবাদ সম্মেলেন নিউমার্কেট দোকান সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চাই। গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষে যারা হামলা চালিয়েছিলেন তারা কেউ ব্যবসায়ী নন।দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এ ঘটনা নিয়ে কেউ যেন উসকানিমূলক কথা, বক্তব্য ও পোষ্ট না দেন এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
নিউমার্কেট এলাকার সড়ক আজ সকাল ১০টা থেকেই শান্ত দেখা গেছে। সড়কে ব্যবসায়ী-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ বিবদমান কোনো পক্ষের উপস্থিতি দেখা যায়নি। নীলক্ষেত-নিউমার্কেট এলাকার সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে সকালে আমিনুল ইসলাম বলেছিলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন। কারণ, সমঝোতা না হলে যেকোনো সময় সংঘর্ষ লাগতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের আজ দুপুর পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে বলেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, নিউমার্কেট ও আশপাশের বিপণিবিতাণগুলোতে ব্যবসায়ী ও কর্মচারী আছেন ৫০ লাখের মতো। শিক্ষার্থীও আছেন বিপুলসংখ্যক। এমন পরিস্থিতিতে সমঝোতা না হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
গত সোমবার রাতে আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবার ঢাকা কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই পক্ষ নিবৃত্ত হয়। সংঘর্ষের কারণে গতকাল নিউমার্কেটসহ আশপাশের অন্তত ২০টি মার্কেট বন্ধ ছিল। ঈদ সামনে রেখে বেচাকেনার মৌসুমে এমন ঘটনায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা জানিয়েছেন।
এদিকে সংঘর্ষ চলার মধ্যে গতকাল বিকেলে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের আবাসিক হল ৫ মে পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দিলে ছাত্ররা তা প্রত্যাখ্যান করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেনকে বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাঁরা যেকোনো মূল্যে হলে অবস্থান করার ঘোষণা দেন।
আজ সকালে নিউমার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নিউমার্কেটসহ আশপাশের সব মার্কেটই বন্ধ আছে। সকাল থেকে কিছু দোকানের কর্মচারীকে নিউমার্কেট এলাকায় দেখা গেছে। তবে সকাল সোয়া ১০টা থেকে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের ভিড় বাড়ে।তাঁরা মার্কেটগুলোর সামনে অবস্থান নেন। ঢাকা কলেজের উল্টো পাশে অবস্থিত নূরজাহান মার্কেট, গ্লোব মার্কেট, নিউমার্কেটের উল্টো পাশের চাঁদনীচক, গাউছিয়াসহ সব মার্কেটের সামনেই ব্যবসায়ী ও তাঁদের কর্মচারীরা ভিড় করেছেন। নীলক্ষেত মোড় ও নিউমার্কেট এলাকায় পুলিশের দুটি দলকেও দেখা গেল। পৌনে ১০টার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তাঁরা দোকানের সামনে থেকে নিরাপদ জায়গায় গিয়ে অবস্থান নেন। অবশ্য নীলক্ষেতের বইয়ের মার্কেটের বাইরের অংশ বন্ধ থাকলেও ভেতরের কিছু দোকান খুলেছে।
জানতে চাইলে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন ঈদের বাজার। রোজার ঈদে বেচাকেনা বেশি হয়। এ সময়ে ব্যবসা বন্ধ মানে বিরাট ক্ষতি। আমরা দোকান খুলতে এসেছি। কিন্তু আমাদের ব্যবসায়ী সমিতি ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ দোকান খুলতে নিষেধ করেছে। তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানালেই আমাদের দোকান খুলতে বলেছেন।’