শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

BBC24 News
রবিবার, ৭ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | শিরোনাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‘সংঘর্ষ প্রবণ’ এলাকার ঘোষণা করেছে- প্রশাসন
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | শিরোনাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‘সংঘর্ষ প্রবণ’ এলাকার ঘোষণা করেছে- প্রশাসন
৭৫৬ বার পঠিত
রবিবার, ৭ মে ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‘সংঘর্ষ প্রবণ’ এলাকার ঘোষণা করেছে- প্রশাসন

---বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় শনিবার পুলিশ একটি অভূতপূর্ব বৈঠক আয়োজন করে। উপজেলার পঞ্চাশজনের বেশি কামার ও বাঁশ বিক্রেতার সাথে নাসিরনগর থানা পুলিশ বৈঠক করে কামারদের দেশীয় অস্ত্র তৈরি করতে নিষেধ করে। সেই সাথে বাঁশ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় দেশীয় অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহার হতে পারে এমন কারো কাছে যেন তারা বাঁশ বিক্রি না করেন।

পুলিশ বলছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘সংঘর্ষ প্রবণ’ এলাকার মানুষ যেন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়তে পারে, তা নিশ্চিত করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার এসপি শাখাওয়াত হোসেন জানান স্থানীয় কামারদের দেশীয় অস্ত্র তৈরিতে ‘নিরুৎসাহিত করার জন্য সচেততামূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে তারা এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

নাসিরনগর ছাড়াও জেলার অন্যান্য এলাকাতেও পুলিশের এই কার্যক্রম চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ সরকার জানান বাঁশ, লোহা ব্যবহার করে যেন স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্র তৈরি না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাঁশ ব্যবসায়ী আর কামারদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন তারা। কেউ দেশীয় অস্ত্র তৈরি করার জন্য কামারদের অর্ডার দিলে তা যেন পুলিশকে জানানো হয়, সে বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বার্তা দেয়া হয়েছে বলে বলছেন তিনি।

মি. সরকার বলেন, “আমাদের এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ তৈরি হওয়ার প্রবণতা রয়েছে আর খুব দ্রুত তা সংঘবদ্ধ সংঘাতে রূপ নেয়। এরকম ক্ষেত্রে অনেক সময়ই দেখা যায় দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।”

গত দুই সপ্তাহ ধরে নাসিরনগর উপজেলার প্রায় ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিন হাজারের বেশি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান মি. সরকার।

পুলিশ জানিয়েছে এসব অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।বাঁশ বিক্রির ওপর যে কারণে নিষেধাজ্ঞা
স্থানীয়রা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ট্যাঁটা, পল, চল, বল্লম, রামদা এবং এককাইট্টার মত দেশীয় অস্ত্র।

এই অস্ত্রগুলোর মূল অংশ লোহার তৈরি ধারালো পাত, যার সাথে অনেকটা হাতলের মত ব্যবহার করা হয় বাঁশের লম্বা লাঠি। এ কারণেই বাঁশের বিক্রি নজরদারির মধ্যে রাখতে চায় সেখানকার পুলিশ।

নাসিরনগরের একজন কামার মন্টু কর্মকার বলছিলেন সংঘর্ষের সময় ব্যবহার হওয়া পল বা চল মূলত মাছ ধরার জন্য ব্যবহার করা হয়।

“পল অনেকটা বল্লমের মত। এ্কটা বাঁশের লাঠির আগায় লোহার সূচালো ছুরির মত অংশ লাগিয়ে এটি তৈরি হয়। সাধারণত বিলে মাছ মারার জন্য এটি ব্যবহার হয়ে থাকে,” বলছিলেন লোহার কাজ করা মন্টু কর্মকার।

পলের মত চলও মাছ মারা জন্যই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে এই অস্ত্রের ক্ষেত্রে বাঁশের মাথায় লোহার যে অংশটি থাকে, সেটি সাধারণত চারকোনা হয় এবং সেটিতে ১৫-২০টি সূঁচালো মাথা থাকে।

মন্টু কর্মকার বলেন বিল এলাকায় ছোট মাছ মারার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।আর এককাইট্টা অনেকটা পলের মতই। এটিতে বাঁশের মাথায় থাকা লোহার অংশটি একইসাথে সূঁচালো ও দুইপাশে ধারালো হয়ে থাকে।

এগুলো ছাড়া ট্যাঁটা, সড়কি বা বল্লমের মত অস্ত্রগুলোও মূলত একটি বাঁশের লাঠির মাথায় লোহার তৈরি ধারালো বা সূঁচালো পাত লাগিয়েই তৈরি করা হয়।যেভাবে সংঘাতের জন্য তৈরি হয় দেশীয় অস্ত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের সময় যেসব অস্ত্র সাধারণত ব্যবহার করা হয়, সেগুলো লোহার কাজ করা কামারদের হাত দিয়েই তৈরি হয়ে থাকে।

সেখানকার একাধিক কামার অবশ্য বলেন যে তারা সাধারণত কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় দা, কাঁচি, কাস্তে বা গৃহস্থালির ব্যবহারের বটি, খুন্তিই তৈরি করে থাকেন ।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন কামার বলেন যে অনেক সময় হয়তো তাদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেউ কেউ পল বা চল বানিয়ে নেন।

তিনি বলছিলেন, “অনেক সময় বিল ইজারা নেয় যারা, তারা বিল পাহারা দেয়ার কথা বলে একসাথে পাঁচ-দশটা পল বা চল বানিয়ে নেয়। কিন্তু আসলে সেটা দিয়ে কি করে, তা তো জানি না।”

এছাড়া অস্ত্র তৈরি করার জন্য অনেক সময় ক্রেতারা স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচগুণ মজুরিও দিতে চান বলে জানান তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি শাখাওয়াত হোসেন বলেন অস্ত্র তৈরি করানোর জন্য কামারদের অনেক সময় আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

“অস্ত্র তৈরি করার সময় কামাররা তাদের সব যন্ত্রপাতি নিয়ে একটা গোপন জায়গায় যায়। হয়তো একটা বাড়িতে যায়। সেখানে হয়তো একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট এলাকার জন্য তারা কিছু অস্ত্র বানায়। অস্ত্র তৈরি শেষ হলে তারা সেখান থেকে চলে আসে।”

“এভাবে অস্ত্র তৈরি যে অপরাধ, তা হয়তো এই কামারদের অনেকেই বুঝতে পারেন না। এই সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যেই আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করছি”, বলছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মি. হোসেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে যে কারণে ‘সংঘর্ষ প্রবণ’ এলাকা মনে করা হয়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ বলছে, এই জেলার বেশকিছু এলাকার মানুষ দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশি ‘সংঘর্ষ প্রবণ।’

জেলার এসপি শাখাওয়াত হোসেনের ভাষ্য অনুযায়ী, “সরাইল, নাসিরনগর, আশুগঞ্জ, নবীনগর এলাকাগুলোতে গোষ্ঠীগত দাঙ্গার ঘটনা বেশি ঘটে। মূলত গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে এই সংঘাতগুলো হয়ে থাকে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী অনেক সময় মরণ সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়।”

পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেও এই দাবির কিছুটা সত্যতা পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ পুলিশের ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের প্রতিবেদনে দেখা যায় দেশে অপরাধের মামলা দায়ের হওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। এসময়ে সবচেয়ে বেশি মামলা দায়ের হয়েছিল কুমিল্লা জেলায়।



আর্কাইভ

যুক্তরাষ্ট্র রাজনীতির থেকে সরে এলে বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে কে : বাইডেন
হিট অ্যালার্ট আরও ৩ দিন বাড়ছে
মার্কিন সিনেটে ইউক্রেন-ইসরায়েল ৯৫ বিলিয়ন সহায়তা বিল পাস
জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়া: ডব্লিউএমও রিপোর্ট
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল জ্যামাইকা
কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বিশ্বের ৭০% শ্রমিক
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ইরানের রাষ্ট্রপতির পাকিস্তান সফর