
বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » ইরান-ইসরাইল সংঘাতের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান দিল দুই দেশ
ইরান-ইসরাইল সংঘাতের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান দিল দুই দেশ
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইরান-ইসরাইল সংঘাতের অবসান হয়েছে ২৪ জুন। টানা ১২ দিনের এ সংঘাতের মধ্যে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সরাসরি বস্তুগত ক্ষতির জন্য প্রায় ৩৯,০০০টি ক্ষতিপূরণ দাবির আবেদন পেয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।বুধবার ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
ইয়েদিওথ আহরনোথ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন ইসরাইল-ইরান সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে ইসরাইলি ট্যাক্স অথরিটির অধীন ক্ষতিপূরণ তহবিলে আনুমানিক ৩৮,৭০০টি দাবি দাখিল করা হয়েছে।
এই দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ৩০,৮০৯টি ভবনের ক্ষতি, ৩,৭১৩টি যানবাহনের ক্ষতি এবং ৪,০৮৫টি যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সামগ্রীর ক্ষতির জন্য।
গণমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ‘আনুমান করা হচ্ছে, আরও কয়েক হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো সেগুলোর জন্য কোনো আবেদন দাখিল করা হয়নি।’
এদিকে, ইসরাইলি ওয়েবসাইট বেহাদ্রে হারেদিম জানিয়েছে, শুধু সেন্ট্রাল ইসরাইলের তেলআবিবেই ২৪,৯৩২টির বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি দাখিল করা হয়েছে। এর পরেই রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আশকেলোন, সেখানে ১০,৭৯৩টি ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত মোট কী পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো আর্থিক অনুমান প্রকাশ করা হয়নি।
গত ১৩ জুন থেকে ইসরাইল ইরানের একাধিক স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে ছিল সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাও। ইসরাইল দাবি করেছে, তেহরান একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে—তবে ইরান এ দাবি কঠোরভাবে অস্বীকার করেছে।
ইসরাইলি হামলার জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সংঘর্ষে যোগ দিয়ে রোববার ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে।
এই দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ১২ দিনের আকাশযুদ্ধের পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার রাতে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। যার মাধ্যমে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের অবসান ঘটে।গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইরান-ইসরাইল সংঘাতের অবসান হয়েছে ২৪ জুন। টানা ১২ দিনের এ সংঘাতে তথা ইসরাইলি বাহিনীর সামরিক আগ্রাসনে ইরানে নিহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে কেবল শেষ ২৪ ঘণ্টাতেই নিহত হন ১০৭ জন।
ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা জাফারকান্দির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা মেহের বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইহুদি রাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনে এ পর্যন্ত মোট ৬০৬ জন ইরানি শহীদ হয়েছেন এবং ৫,৩৩২ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগের ২৪ ঘণ্টা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ, এই সময়ে শহীদ হয়েছেন ১০৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১,৩৪২ জন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, শহীদদের ৯৫ শতাংশই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন। আর মাত্র ৫ শতাংশ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে গত দুই সপ্তাহে ইসরাইলি হামলার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি হাসপাতাল খালি করে রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে বলেও জানান জাফারকান্দি।
ইসরাইলি বাহিনী গত ১৩ জুন থেকে ইরানের বিরুদ্ধে একটি অপ্ররোচিত সামরিক অভিযান শুরু করে। যার লক্ষ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক, সামরিক এবং আবাসিক স্থাপনাগুলো। এতে বহু শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক শহীদ হন।
এ হামলার পরই ইরানি প্রতিরক্ষা বাহিনী পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ফোর্স পরিচালিত ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ এর অংশ হিসেবে তারা ২২টি পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যা ইসরাইল অধিকৃত বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায় এবং এতে ২৮ জন নিহত হয়।