
রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » জাতিসংঘের প্রতিবেদন মানুষ পড়ে না: জাতিসংঘের মহাসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদন মানুষ পড়ে না: জাতিসংঘের মহাসচিব
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক জাতিসংঘ প্রতিবছর অসংখ্য বৈঠক ও গবেষণা আয়োজন করে এবং আড়াইশর বেশি অধীন সংস্থা মিলিয়ে হাজার হাজার প্রতিবেদন তৈরি করে। এসব কার্যক্রমে জড়িত থাকে বিপুলসংখ্যক মানুষ ও বিপুল অর্থ। কিন্তু বাস্তবে এই প্রতিবেদনের বড় অংশই পড়া হয় না— এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘের কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও খরচ হ্রাসে সম্ভাব্য উদ্যোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সংস্থাটির তৈরি অধিকাংশ প্রতিবেদন সেভাবে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে না। এতে সাধারণ মানুষের অনাগ্রহ এবং অংশীজনদের উদাসীনতা জাতিসংঘের দক্ষতা ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহারে প্রশ্ন তুলেছে।
বিষয়টি নিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার (১ আগস্ট) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিজেই সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে অবহিত করেন। তার ‘ইউএন ৮০’ সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই পর্যালোচনা পরিচালিত হয়। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা— যেমন সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী কীভাবে হাজার হাজার ম্যান্ডেট বাস্তবায়ন করা হয়, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের গঠনতন্ত্রভুক্ত ২৪০টি সংস্থা বছরে গড়ে ২৭ হাজার বৈঠকে অংশ নেয় এবং জাতিসংঘ সচিবালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংখ্যা বছরে ১ হাজার ১০০টি— যা ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। এসব বৈঠক ও প্রতিবেদনের পরিমাণকে ‘সহনসীমার প্রান্তে’ ঠেলে দেওয়ার মতো চাপ বলেই মনে করছেন তিনি।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তৈরি করা প্রতিবেদনগুলোর খুব অল্পসংখ্যকই পাঠকপ্রিয়তা পায়। মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিবেদনই ৫ হাজার ৫০০ বারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে, যা সর্বোচ্চ। আবার প্রতি পাঁচটি প্রতিবেদনের একটি ১ হাজার বারেরও কম ডাউনলোড হয়েছে। তবে গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, ‘ডাউনলোড মানেই যে তা পড়া হয়েছে— এমনটা কিন্তু নয়।’
জাতিসংঘ চলতি বছর ৮০ বছরে পদার্পণ করছে। তবে বিগত সাত বছর ধরে সংস্থাটি ক্রমাগত আর্থিক সংকটে রয়েছে। ১৯৩টি সদস্য দেশের অনেকেই নির্ধারিত চাঁদা সময়মতো বা পুরোপুরি পরিশোধ না করায় এই সংকট ঘনীভূত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটেই গত মার্চে গুতেরেস ‘ইউএন ৮০’ টাস্কফোর্স চালু করেন, যার অন্যতম লক্ষ্য ছিল সংস্থার কাঠামোগত সংস্কার এবং সম্পদের অপচয় রোধ।
টাস্কফোর্সের আওতায় বিলম্বে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের চলমান সংস্কার পরিকল্পনার একটি অংশ। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য গুতেরেস কম সভা এবং কম কিন্তু কার্যকর প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, প্রতিটি প্রতিবেদন যেন সংশ্লিষ্ট ম্যান্ডেট পূরণে কার্যকর হয়— সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।