শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

BBC24 News
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » করোনাভাইরাস: শিশুরা কেন অসুস্থ হচ্ছে না?
প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » করোনাভাইরাস: শিশুরা কেন অসুস্থ হচ্ছে না?
৯৭৮ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

করোনাভাইরাস: শিশুরা কেন অসুস্থ হচ্ছে না?

---বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিনিধি:চীনে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি জন্মের মাত্র ৩০ ঘণ্টা পর এক নবজাতকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়ার খবর মুহূর্তেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এটি সবচেয়ে কম বয়সে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ৪০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ চীনে আক্রান্ত হলেও আরো ৩০টি দেশে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।

তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা খুবই কম।

প্রাদুর্ভাব সংক্রান্ত সর্বশেষ গবেষণা যেটি আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সেখানে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহানের জিনইনতান হাসপাতালের রোগীদের বিষয়ে বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে যে, ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকেরই বয়স ৪০ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। মাত্র ১০ শতাংশ রোগী ৩৯ বছরের কম বয়সী।

“শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা বিরল,” গবেষকরা বলেন।

কিন্তু এমনটা হওয়ার কারণ কী?
শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা কম

এনিয়ে অনেক তত্ত্ব রয়েছে কিন্তু শিশুরা কেন আক্রান্ত হচ্ছে না এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে কোন সুনির্দিষ্ট জবাব নেই।

“কারণ আসলে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, হয় শিশুরা সংক্রমণ এড়িয়ে যাচ্ছে, নয়তো তারা মারাত্মক সংক্রমণের শিকার হচ্ছে না,” বিবিসিকে একথা বলেন ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের ভাইরাস সম্পর্কিত বিজ্ঞান বা ভাইরোলজির অধ্যাপক ইয়ান জোনস।

এর অর্থ হচ্ছে শিশুরা রোগটিতে খুব মৃদুভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, যার কারণে তাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। আর এ কারণেই তারা চিকিৎসকের কাছে যায় না এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করারও দরকার হয়না। এবিষয়ে সহমত জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল প্রভাষক নাথালি ম্যাকডারমট।

“পাঁচ বছরের বেশি বয়সী এবং কিশোরদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাইরাস মোকাবেলায় বিশেষ ভাবে কাজ করে,” তিনি বলেন।

“তারা হয়তো আক্রান্ত কিন্তু তাদের সংক্রমণটা বেশ মৃদু বা তাদের মধ্যে সংক্রমণের কোন উপসর্গ থাকে না।”

শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের এই নিম্নহার এর আগেও দেখা গেছে। সম্প্রতি ২০০৩ সালে চীনে সার্স ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় ৮০০ মানুষ মারা গেলেও তখনও শিশুদের সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কম ছিল।

২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল(সিডিসি) এর বিশেষজ্ঞরা ১৩৫ জন শিশু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুঁজে পান। কিন্তু তখন “শিশু ও কিশোরদের মধ্যে একজনও মারা যায়নি” বলে জানান তারা।নববর্ষের ছুটি কি শিশুদের রক্ষা করেছে?

ম্যাকডারমট আরো মনে করেন যে, প্রাপ্তবয়স্করা যেভাবে ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে শিশুরা হয়তো সেভাবে ততটা সংস্পর্শে আসেনি। কারণ প্রাদুর্ভাব শুরু হয় চীনের নতুন বছরের ছুটির সময় যখন স্কুলগুলো বন্ধ ছিল।

চীনের প্রায় সবগুলো প্রদেশেই স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং অনেক স্কুল পুরো ফেব্রুয়ারি মাস বন্ধ থাকবে।

“প্রাপ্তবয়স্করা বাড়িতে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে তাদের কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখে।”

তিনি মনে করেন যে এই চিত্র পাল্টে যেতে পারে কারণ “রোগ বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে এবং এতে করে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাইরাসের সংস্পর্শে আশার আশঙ্কাও বেড়ে যাচ্ছে।”

যাইহোক, কিন্তু সংক্রমণের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়লেও সেই হারে শিশুদের আক্রান্তের ঘটনা বাড়েনি।

এখানেও সার্সের প্রাদুর্ভাবের উদাহরণ টানা যায়: সিডিসির গবেষকরা যারা শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখছেন তারা বলছেন যে, ১২ বছরের কম বয়সীদের হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন কম হয়।শিশুদের তুলনায় কি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হয়?

যদিও কম সংখ্যক শিশু আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন না যে, তারা আসলে আক্রান্ত হচ্ছে না।

এ বিষয়ে আরো সম্ভাব্য বিশ্লেষণটি হলো, এই প্রাদুর্ভাব হয়তো সেই রোগগুলোর মধ্যে একটি যা শিশুদের তুলনায় প্রাপ্তবয়স্কদের মারাত্মকভাবে সংক্রমিত করে, যেমন জলবসন্ত।

“শিশুদের হয়তো কোনভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে-এমন ধারণার তুলনায় এটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি,” বিবিসিকে একথা বলেন অ্যান্ড্রু ফ্রিডম্যান যিনি কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ।

তিনি বলেন, “এটা এ কারণেও হতে পারে যে, কর্তৃপক্ষ হয়তো যাদের উপসর্গ নেই বা মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন কাউকে পরীক্ষাই করছে না।”

হংকংয়ে সার্স প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি উল্লেখ করে এ বিষয়ে একমত হওয়ার কথা জানান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের স্ট্যাটিস্টিকাল এপিডেমিওলজির বিশেষজ্ঞ ক্রিসেল ডনেলি।

“আমার সহকর্মীরা যে বিষয়ে একমত হয়েছি তা হলো কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রভাব তেমন আগ্রাসী হয়না- যার কারণে তারা মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে না।”আগে থেকেই অন্য রোগে আক্রান্ত

যেসব প্রাপ্তবয়স্করা আগে থেকেই অন্য রোগে আক্রান্ত তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই দুর্বল- যেমন ডায়াবেটিস বা হৃদরোগে আক্রান্তরা এই প্রাদুর্ভাবের সময় বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

“নিউমোনিয়া(করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলোর মধ্যে একটি) তাদেরকেই বেশি আক্রান্ত করে যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল কারণ তাদের স্বাস্থ্য এমনিতেই খারাপ কিংবা তারা হয়তো তাদের জীবনের শেষ দিনগুলো পার করছে,” ইয়ান জোনস বলেন।

“ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্য রোগগুলোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।”

জিনইনতান হাসপাতালে যেসব রোগীদের উপর গবেষণা চালানো হয় তাদের অর্ধেকই আগে থেকেই নিরাময়যোগ্য নয় এমন অন্য কোন রোগে আক্রান্ত ছিল।কিন্তু শিশুরা কি ভাইরাস ছড়ানোর জন্য পরিচিত নয়?

“শিশুরা সাধারণত নিজেরাই বেশি পরিমাণে ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং তা ছড়িয়েও দিয়ে থাকে- আর তাদেরকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রধান সংক্রামক বা ‘সুপার স্প্রেডার’ হিসেবে পরিচিত,” বলেন ইয়ান জোনস।

“তারা খুব সহজেই শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ছড়ায় এবং নার্সারির বাচ্চাদের সাথে যারা থাকেন তারা এটি ভালভাবেই জানেন,” তিনি বলেন।

তাই নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতদের তালিকায় বড় সংখ্যায় শিশুদের থাকার কথা ছিল- কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।

এর কারণ হতে পারে যে, ভাইরাসে বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে, অথবা রোগটি হয়তো প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের প্রতি তেমন আগ্রাসী হয় না, আর তাই শিশুরা চিকিৎসা সেবা নেয় না এবং পরীক্ষাও নথিবদ্ধ করা হয়না।

তবে চলতি প্রাদুর্ভাব নিয়ে আরো বেশি গবেষণার পর হয়তো এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।

আবার এটাও হতে পারে যে, সচেতন বাবা-মা এবং স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিশুরা হয়তো সংক্রমণের সংস্পর্শে আসছে না। এক্ষেত্রে চীনে স্কুল খোলার পর যখন শিশুরা স্কুলে যাবে তখন এ বিষয়ে জানা যাবে।



এ পাতার আরও খবর

সম্পর্ক ‘উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক ‘উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
বাংলাদেশে মাতৃ মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণের সাফল্যের প্রশংসা করেন : জাতিসংঘ বাংলাদেশে মাতৃ মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণের সাফল্যের প্রশংসা করেন : জাতিসংঘ
বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও হজ ভিসার সময় বাড়াতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও হজ ভিসার সময় বাড়াতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফল ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফল ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের সার্বিক উন্নয়ন আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক উন্নয়ন আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের খাদ্যে ও আর্থসামাজিক উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের খাদ্যে ও আর্থসামাজিক উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন করবে ভারত তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন করবে ভারত
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব আসতে পারে: প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব আসতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রকৌশলীদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রকৌশলীদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

আর্কাইভ

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত নিয়ে যা বলল চীন
ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার
বেঁচে নেই প্রেসিডেন্ট ইব্রাহি রাইসি: ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ ইরানের প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে জাতিসংঘ
ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে
জীবন বাঁচাতে কোন আশ্রয়ের জায়গা নেই, রাফাহ ছেড়েছেন ৮ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ
বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
আবারও এভারেস্ট চূড়ায় বাংলাদেশের বাবর আলী
গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত ১২১ ফিলিস্তিনি