রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বাড়ছে
বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বাড়ছে
বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ উপসর্গ নিয়ে গ্রাম পর্যায়ে করোনা মারা যাচ্ছেন অনেকে৷ মৃতের সংখ্যা বাড়লেও পরীক্ষা না হওয়াতে করোনার সরকারি পরিসংখ্যানে তা উঠে আসছে না৷ যে কারণে গ্রামের মানুষ পরিস্থিতি আঁচ করতে পারছেন না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার কুয়াতপুর গ্রামের বাসিন্দা বাটুল বিশ্বাস৷ বয়স ৫৫৷ ঈদের আগের দিন ২০ জুলাই নিজ বাড়িতে মারা গেছেন তিনি৷ মৃত্যুর আগে শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশিসহ করোনার নানা ধরনের উপসর্গ থাকলেও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি৷ গ্রামের লোকেরা বলছেন, ‘‘বর্ষাকালে জ্বর, কাশি সবারই হয়৷ এটা তেমন কিছু নয়৷শুধু বাটুল বিশ্বাসই নন, গ্রামাঞ্চলে করোনার উপসর্গ নিয়ে এমন অনেকেই মারা যাচ্ছেন৷ আর গত কয়েক সপ্তাহে গ্রামাঞ্চলে এমন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে৷
তবে করোনায় মৃত্যু তালিকায় তাদের নাম আসছে না৷ শুধু যারা হাসপাতালে করোনা পজেটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাচ্ছেন, সেই সংখ্যাটিই করোনায় নিহত বলে লিপিবদ্ধ হচ্ছে৷
মাগুরা জেলার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ‘‘গত ২৩ দিনে মাগুরায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২০ জনের মতো৷ আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ জন৷ যেটা অন্য যেকোন জেলার তুলনায় কম৷’’গ্রামে যারা এমন উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন তাদের নাম তালিকায় আসছে কীনা জানতে চাইলে ডা. দেওয়ান বলেন, ‘‘না, যারা হাসপাতালে আসছেন তাদের নামই তালিকায় উঠছে৷ সর্বশেষ গত তিন-চার সপ্তাহে যারা হাসপাতালে এসেছেন তাদের অধিকাংশেরই অক্সিজেনের লেভেল ৩০-৩৫ এ নেমে এসেছিল৷ ফলে দ্রুত অক্সিজেন দিয়েও তাদের বাঁচানো যাচ্ছে না৷ এছাড়া সারাদেশে যেখানে টিকা নেওয়ার হার এক শতাংশ, সেখানে মাগুরায় ৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে৷’’
চলতি মাসের ২৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের সব মাসের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে৷ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ দিনে দুই লাখ ৫৬ হাজার একশ ৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷ আর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৪ হাজার ৩৪৭ জন মারা গেছেন৷সরকারি হিসেবে প্রতিদিন যে মৃত্যুর সংখ্যা বলা হচ্ছে সেটি উদ্বেগজনক৷
এর বাইরেও সারাদেশে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে৷ আর মৃত্যুর সংখ্যা গ্রামে সবচেয়ে বেশি৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনাধীন ‘বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি’ সারাদেশে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মানুষের তালিকা করছে৷ চলতি মাসের তালিকা এখনও সম্পন্ন হয়নি বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি৷ ফলে এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যাটি বলা সম্ভব না হলেও উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বলে জানায় তারা৷ এ পর্যন্ত যে তালিকা হয়েছে তাতে গত মাসের তুলনায় এই মাসে উপসর্গ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দ্বিগুণে বেশি হতে পারে৷ এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য উপাত্তে সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে দাবি তাদের৷
গ্রামে আক্রান্তদের বেশিরভাগই নমুনা পরীক্ষা করাতে আগ্রহী নন৷ তবে শুধু আগ্রহের ঘাটতি আছে তা নয়৷ সব এলাকায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও নেই বলে জানা গেছে৷ যে কারণে অনেকেই ঘরে বসে চিকিৎসা করছেন৷ যাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো তারা হয়তো কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে উঠছেন৷ আবার সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি নিয়ে মারা যাওয়ার ঘটনার খবরও পাওয়া যাচ্ছে৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘‘উপসর্গ দেখা দিলেও গ্রামের মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে চান না৷ আমি নিজে ঈদের দিন গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখেছি, মানুষের ভয় অনেক কমে গেছে৷ স্বাস্থ্যবিধি মানার আগ্রহ নেই তাদের৷ মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে গ্রামের মানুষকে করোনার বিষয়ে সচেতন করতে জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্যকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ ঈদের আগেই এই কমিটি করা হয়ছে৷ উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা নেওয়া, ঘরে থাকা, আইসোলেশনে রাখা এসব কাজে সহযোগিতা করবে ওই কমিটি৷ দু’এক দিনের মধ্যে আবার এই কমিটিকে কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ দেখেন আমরা তো টেস্টের ব্যবস্থা করেছি৷ এখন মানুষ যদি টেস্ট করাতে না যায় তাহলে আপনি কী করবেন?’’
তদন্ত প্রয়োজন
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘‘উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর তদন্ত হওয়া উচিত৷ সরকারের আইনেও আছে, প্রতিটি মৃত্যুর কারণ জানতে হবে৷ এই মৃত্যুর কারণগুলো যদি করোনা হয়, তাহলে কিন্তু গ্রামের মানুষ ভয় পাবে৷ যেটা এখন তাদের মধ্যে কাজ করছে না৷ আসলে সবকিছু মিলিয়ে মানুষকে সচেতন করার বিকল্প নেই৷ এখনও তো গ্রামের অধিকাংশ মানুষ টিকা নেয়নি৷ তাদের দ্রুত টিকার আওতায় আনতে হবে৷”
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেছেন, অনেক সময় দেখা যায় রোগীর অবস্থা খুব জটিল হওয়ার পর হাসপাতালে আসছেন৷এরপর চিকিৎসা শুরু হয়৷ পাশাপাশি রোগীর নমুনা নিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়৷ ফলে রিপোর্ট আসার আগেই হয়ত কারও মৃত্যু ঘটে৷ তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটাকে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদন দিয়ে থাকে৷




জলবায়ু তহবিলের ২১১০ কোটি টাকার দুর্নীতি: টিআইবি
ভারত–বাংলাদেশের ভিসা জালিয়াতি, কঠিন হচ্ছে কানাডা: সিবিসির প্রতিবেদন
শাপলা কলি’ নিচ্ছে এনসিপি, নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা
সম্রাটদের সমাধিসহ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘর চালু মিশরে
রুশ সেনাদের আক্রমণপ কঠিন পরিস্থিতির মুখে ইউক্রেন
নৌকা’ উপহার নিয়ে বিপাকে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির কী করবেন জানতে চাইলেন ফেসবুকে
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন, উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে
৭১-এর হত্যাযজ্ঞে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: জামায়াতে ইসলামী
ট্রাম্পের কাছে যে কারণে ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
চীনের জন্য বিশেষ সুযোগ করে দিল যুক্তরাষ্ট্র 