শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
BBC24 News
মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » বাংলাদেশে করোনা মহামারির সব মৃত্যুর তথ্য সরকারি হিসাবে কেন আসেনি?
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » বাংলাদেশে করোনা মহামারির সব মৃত্যুর তথ্য সরকারি হিসাবে কেন আসেনি?
৬৭৫ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশে করোনা মহামারির সব মৃত্যুর তথ্য সরকারি হিসাবে কেন আসেনি?

---বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকাঃ বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল করোনার চিকিৎসা দিচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। তবে সেই তথ্য নেই সরকারের কাছে। রাজধানীর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে গত দুই মাসে করোনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর যে তথ্য প্রকাশ করছে, তাতে ওই তিনটি হাসপাতালের নাম নেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি তদন্ত দল গত শনিবার রাজধানীর উত্তরার তিনটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে মৃত্যুর এই তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে শিন শিন জাপান হাসপাতালে ১০ জন, উত্তরা আল–আশরাফ জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন এবং রেডিকেল হাসপাতালে ১০ জন মারা গেছেন করোনায়। এই তিন হাসপাতালের করোনা চিকিৎসার অনুমোদন নেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগনির্ণয় কেন্দ্র আছে প্রায় ১৪ হাজার। এগুলোর মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। করোনার চিকিৎসার অনুমোদন পাওয়া বেসরকারি সব হাসপাতাল করোনার রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠায়। অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো তা করে না। তাই মৃত্যুর সঠিক তথ্যও জানা যাচ্ছে না।

অনুমোদনহীন হাসপাতালগুলোতে করোনার চিকিৎসাবিধি না মানারও প্রবণতা থাকে। এতে যেমন সঠিক চিকিৎসা হয় না, তেমনি এখানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে–নজির আহমেদ বলেন, ‘উত্তরার তিনটি হাসপাতালে মৃত্যুর যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা বিচ্ছিন্ন কোনো তথ্য নয়, এটি সারা দেশের একটি চিত্র। সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য ঠিকভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দেখা যাবে, স্বাস্থ্য বিভাগ যে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর তথ্য বলছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি।

গতকাল সোমবার উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে শাহ মাখদুম অ্যাভিনিউর শেষ প্রান্তে একটি বহুতল ভবনে রেডিকেল হাসপাতাল। দ্বিতীয় তলায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্যালয়। তৃতীয় তলায় তথ্য ও অনুসন্ধানের জায়গা। সেখানে কথা হয় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন ও সহব্যবস্থাপক শাহীন উদ্দীনের সঙ্গে। তাঁরা বললেন, এটি ২০ শয্যার হাসপাতাল। করোনা চিকিৎসার অনুমোদন তাঁদের নেই।

অনুমোদন না থাকলেও কীভাবে করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে আমজাদ হোসেন পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘যারা চিকিৎসার জন্য আসছে, তাদের কি আমরা ভর্তি করব না?’

হাসপাতালের এই দুই কর্মকর্তা জানালেন, গত এক মাসে এই হাসপাতালে করোনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সেই তথ্য তাঁরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানাননি। কেন জানাননি প্রশ্নের উত্তরে আমজাদ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানোর ব্যবস্থা নেই।

সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য ঠিকভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দেখা যাবে, স্বাস্থ্য বিভাগ যে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর তথ্য বলছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি।

হাসপাতালের কাছেই সোনারগাঁও জনপথ রোডে উত্তরা আল–আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল। দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, অনুসন্ধানের ডেস্ক ফাঁকা। পরিবেশটা সুনসান। দুটি কিশোর মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত। এদের একজন অনুসন্ধান ডেস্কের দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিকে ডেনে আনে। ওই ব্যক্তি বলেন, হাসপাতালের মালিক বা তথ্য দেওয়ার মতো কোনো ব্যক্তি হাসপাতালে উপস্থিত নেই। তিনি মুঠোফোনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে পরিচালক মো. জাহিদুর রহমানের ভিজিটিং কার্ড হাতে ধরিয়ে দেন। মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পরিচালকের সাড়া পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত দুই মাসে এই হাসপাতালে চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে শিন শিন জাপান হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ঢোকার মুখে ১৫–২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার। অন্য দুটি হাসপাতালের চেয়ে এখানে লোকসমাগম বেশি। হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা করোনা রোগীর চিকিৎসা করেন না। তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগী ফেরান না। শ্বাসকষ্ট বা অন্য সমস্যা নিয়ে আসা রোগীর করোনা শনাক্ত হলে তাঁদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা কত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, সেই তথ্য দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত দুই মাসে এই হাসপাতাল ১০ জন করোনা রোগী মারা গেছেন।

এই তিন হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচ সদস্যের একটি দলের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা দুই মাসের তথ্য নিয়েছি। মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চয়ই আরও বেশি হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, ‘এই পরিদর্শনের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। সেই প্রতিবেদনে নিশ্চয় কিছু সুপারিশ করা হবে।’

সারা দেশের পরিস্থিতি অজানা

সারা দেশের প্রায় ছয় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কোন কোন হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হয়, তার সঠিক তথ্য নেই।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সহসভাপতি শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘খুলনায় তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার অনুমোদন আছে। কিন্তু এর বাইরে আরও অনেক ছোট ছোট ক্লিনিকে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে। রোগীর ‘করোনার উপসর্গ’ আছে, এই কথা বলে করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে। এটা অপরাধ।’ একই ধরনের কথা প্রথম আলোর চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরার প্রতিনিধিকে বলেছেন চিকিৎসক নেতা ও চিকিৎসকেরা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মইনুল আহসান বলেন, ‘তাঁদের সংগঠনে প্রায় ১২ হাজার সদস্য। সদস্যরা কে কী করছে, এটা জানা কঠিন। সবাইকে নিয়মনীতি অনুসরণ করার কথা বলা হয়। আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না, পারে সরকার।’

সারা দেশের সব বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত নজরদারি করার ঘাটতি আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। সম্প্রতি হাসপাতাল পরিদর্শনের জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুবার তাদের পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। উত্তরার ওই তিন হাসপাতালের বিষয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম  বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আরও থাকতে পারে। আমরা যখনই জানব, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’



আর্কাইভ

কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বিশ্বের ৭০% শ্রমিক
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ইরানের রাষ্ট্রপতির পাকিস্তান সফর
ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ
মার্কিন ঘাঁটিতে মিসাইল ও ড্রোন হামলা
দেশব্যাপী আবারও ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি
মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচন, মুইজ্জুর দলের নিরঙ্কুশ বিজয়
পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের নির্দেশ- গণপূর্তমন্ত্রীর