
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » যে মামলা আইভি কারাগারে, বাদী নিজেই স্বীকার করলেন মামলাটি মিথ্যে’
যে মামলা আইভি কারাগারে, বাদী নিজেই স্বীকার করলেন মামলাটি মিথ্যে’
বিবিসি২৪নিউজ,অনলাইন ডেস্ক: দেশে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন নারায়ণগঞ্জে একটি হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আসামি করা হয়েছিলো। ওই মামলায় আরো আসামী করা হয় সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক এমপি কায়সার হাসানাত, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, নূর উদ্দিন মিয়া, শাহজালাল বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, আইভীর ভাই শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল, কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন, বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল সহ ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো অজ্ঞাত আরও ৩০০/৪০০ জনকে ।
এই মামলায় গোলাম দস্তগীর গাজীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ।
আশ্চর্য হলেও সত্যি দায়ের করা ওই মামলাটি বানোয়াট ও মিথ্যে । আর ওই ঘটনাকে পুঁজি করে মামলার বাদী নাজমুল হক ও ভিকাটিম সিদ্ধিরগঞ্জের গার্মেন্টস কর্মী মিনারুল ইসলামের স্ত্রী হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে।
দেশ টিভির অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে ওই মামলার বাদী নিহত গার্মেন্টস কর্মী মিনারুল ইসলামের ভাই মামলার বাদী নাজমুল হক এই মামলা করতে চান নাই কিন্ত মামলাটি করতে বাধ্য হয়েছে।
এই মামলার বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড সচিব শামসুল কবীর বলেছেন, সার্ভার চেক করে পাওয়া গেছে গার্মেন্টস কর্মী মিনারুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জে মারা গেছেন সড়ক দূর্ঘটনায়।
অথচ ৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সিদ্ধিরগঞ্জে দায়ের করা এই মামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মিনারুল ইসলাম মারা গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক।
তৎকালীন সময়ে ওসি জানিয়েছিলেন, মামলার বাদী নাজমুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিতে নিহত পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলামের ভাই। মামলায় ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০০৩ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
গণঅভ্যূত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৯ আগস্ট দেশের বাকি সিটি করপোরেশনগুলোর মতো টানা তিনবার নির্বাচিত সিটি মেয়র আইভীকেও অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও ‘পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি।
হত্যা মামলাটির বিষয়ে জানতে চাইলে আইভী বলেছেন, ‘আজীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি। কখনও দলবাজি করি নাই। আমার বাবাও কোনদিন খারাপ রাজনীতি করেন নাই। তাকে আদর্শ মেনেই আমি সবসময় গণমানুষের স্বার্থে কাজ করেছি। কিন্তু এখন আমি ও আমার ছোটভাই বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের হিংসাত্মক মনোভাবের কারণে খারাপ রাজনীতির শিকার হচ্ছি।’
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আদমজী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম। তলপেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিনারুলকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন রাজশাহীতে তার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয় বলেও মামলায় উল্রেখ করলেও এবার ৫ মাস পর বেড়িয়ে এলো পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম প্রকৃতপক্ষে গুলিতে মারা যায় নাই তার মৃত্যু হয়েছে সড়ক দূর্ঘটনায়।