
শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় হুমকির মুখে মধ্যপ্রাচ্য, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান!
তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় হুমকির মুখে মধ্যপ্রাচ্য, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান!
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কয়েক দিন ধরে গুঞ্জন ছিল ইরানে হামলা করতে পারে ইসরায়েল। শেষ পর্যন্ত হামলা করেছে এবং সেটা খোদ ইরানের রাজধানী তেহরানে। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সদর দপ্তর ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাতে হামলা করা হয়।
রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব দিকে বিশাল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা নূর নিউজের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা এ খবর জানায়।
আজ শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাত চারটার পর এ হামলা চালানো হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সদর দপ্তরে হামলা হয়েছে। হামলার পর আগুন জ্বলতে দেখা গেছে মধ্য ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায়।
ইরানে এই হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ভয়ের সঞ্চার হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ এই হামলাকে ‘আগাম প্রতিরোধমূলক’ হামলা বলে বর্ণনা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা করেন ইরান থেকে শিগগিরই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হতে পারে।
ইরানে হামলার এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘এই অভিযানের লক্ষ্য হলো ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো ধ্বংস করা। এই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে। ইসরায়েলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই এখন প্রধান লক্ষ্য।’
এখন ইরান কী পদক্ষেপ নেয়, পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা, নাকি আরও বড় পরিসরে ইসরায়েলে হামলা করা হবে, সেটি অনুমান করতে পারছে না কেউ। ইরানও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে দুই দেশে সর্বাত্মক যুদ্ধেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরায়েল জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা ইরানকে প্রতিশোধে উসকে দিচ্ছে। পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
অবশ্য গত বুধবার ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘পারমাণবিক আলোচনা ভেঙে পড়লে এবং যুদ্ধ শুরু হলে আমাদের লক্ষ্য হবে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত সব মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। প্রয়োজনে আমরা এগুলোতে সরাসরি আঘাত করব।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ইরানে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সম্পৃক্ত নয়। ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলা হয়, ইরানের রাজধানী তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবর, তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সদর দপ্তরে হামলা হয়েছে। হামলার পর আগুন জ্বলতে দেখা গেছে মধ্য ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাতে।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তেহরানজুড়ে ৬ থেকে ৯টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। হামলা হয়েছে আবাসিক ভবনেও।
স্থানীয় তাসনিম সংবাদ সংস্থার বরাতে আল–জাজিরা জানায়, শহরজুড়ে ইসরায়েলি হামলার পর তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা–নামা স্থগিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।