শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২
BBC24 News
বুধবার, ৬ মে ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » বাংলাদেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী দারিদ্রসীমার মধ্যে পড়েছেন
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » বাংলাদেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী দারিদ্রসীমার মধ্যে পড়েছেন
১৬১৩ বার পঠিত
বুধবার, ৬ মে ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী দারিদ্রসীমার মধ্যে পড়েছেন

---বিবিসি২৪নিউজ,মেহেদী হাসান,ঢাকা: বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে একদিকে খেটে খাওয়া মানুষের রোজগারে টান পড়ছে, অন্যদিকে বাইরে বেরুলে সংক্রমণের ঝুঁকি - এ যেন উভয় সংকটেমধ্যে পড়েছেন ! তাই গত ২৬শে মার্চ থেকে চলছে সাধারণ কারণে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সব বন্ধ রয়েছে।

ইতিমধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষজন - বিশেষ করে পোশাক কারখানার শ্রমিক, গৃহকর্মী, রিকশাচালক ও পরিবহন শ্রমিকসহ নানা পেশার মানুষ - কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

তবে শুধু নিম্ন নয়, মধ্য আয়ের মানুষের রোজগারেও করোনাভাইরাসের ‘লকডাউনের’ প্রভাব পড়েছে। এরই মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন কাটছে কিংবা অর্ধেক বেতন দিচ্ছে, এমনকি বেতন দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে।

যদিও সরকার বেশ কিছুদিন ধরেই কর্মীদের বেতন না কাটা এবং কর্মী ছাটাই না করার জন্য নিয়োগদাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।

ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক চিত্রা পেরেইরার স্কুল বন্ধ মার্চের ১৮ তারিখ থেকে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয় সেই স্কুলে।

কিন্তু এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, যতদিন স্কুলের কার্যক্রম স্বাভাবিক না হবে ততদিন শিক্ষক ও অন্য কর্মীদের পুরো বেতন দেয়া সম্ভব হবে না।

স্কুলের সব শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন অর্ধেক করে দেয়া হয়েছে।“এখন আমাদের স্কুলে যেতে হয় না ঠিকই, কিন্তু সিলেবাস ধরে টপিক ম্যাটেরিয়াল বানানো ও অনলাইন লেকচার তৈরি করার কাজ নিয়মিত করছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক দেয়া এবং সেগুলো আবার মেইল বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর পর চেক করে ফিডব্যাকও দিচ্ছি আমরা নিয়মিত।”

কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে, লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে স্বাভাবিক বেতন দেয়ার ক্ষমতা নেই তাদের, কারণ শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না, বেতন দিচ্ছে না।

“আবার আমি বাসায় বাচ্চাদের ব্যাচে পড়াতাম, মূলত ওই রোজগারটা দিয়েই আমার সংসারটা চলে। কিন্তু গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সেটা বন্ধ। ফলে সংসার চালানোর জন্য আমাকে আমার সঞ্চয়ে হাত দিতে হয়েছে।”‘চেম্বার বন্ধ, আয় নাই, কিন্তু স্টাফ তো আছে’

আইনুন্নাহার সুলতানা একজন আইনজীবী। এটি তার আসল নাম নয়। বলছিলেন, প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হবার পর থেকেই তার চেম্বারে মক্কেলদের আসা কিছুটা কমে যায়।

এরপর সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ হলে তিনি নিজেও মগবাজারে নিজের চেম্বারে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

“আদালত বন্ধ, মামলার কার্যক্রম বন্ধ, সুতরাং আমার তো ইনকাম বন্ধ। কিন্তু আমার একজন সহকারী আছে, একজন কেয়ারটেকার আছে। বিদ্যুত-পানির জন্য মাসে নির্দিষ্ট অর্থ দিতে হয়। বাসা ভাড়া দিতে হয়, ড্রাইভার আছে, গৃহকর্মী আছে। অথচ আমার রোজগার বন্ধ।”

“আমার স্বামী এখন উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এখন আমি কার কাছে সাহায্য চাইবো? উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকে আমার একটা ডিপিএস ছিল, সেটা ভাঙাতে হল।”মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে হাত

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা বিআইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ মনে করেন, করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ উভয় সংকটে পড়েছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে আর্থিক ঝুঁকিতে পড়তে কাধ্য হচ্ছে অনেক মানুষ।

“এর মধ্যে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তের বিপদ অনেক বড়, সংকটে এরা পথেও নামতে পারবে না আবার কারো কাছে হাতও পাততে পারবে না।”

তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে হাত পড়বে।

“তবে এখুনি সেটা অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে কমই দেখা যাবে। কারণ, মানুষের সাধারণ প্রবনতা হিসেব করলে দেখা যাবে প্রথমদিকে নিজেদের হাতে থাকা সঞ্চিত অর্থ খরচ করবে তারা, এরপর দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ে হাত দেবে।”

“সবেশষে কোন বিনিয়োগ থাকলে সেটা খরচ করে ফেলবে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে, আগামী দুয়েক মাসের মধ্যেই সেটা প্রবলভাবে দৃশ্যমান হবে।”

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, লকডাউনের ফলে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ পরিবার ভঙ্গুর জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়বে।

সংস্থাটি বলছে, এই পরিস্থিতির কারণে দারিদ্র সীমার ঠিক ওপরে যারা আছেন, অর্থাৎ নিম্ন মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী, তারাও দারিদ্রসীমার মধ্যে পড়ে যাবে বর্তমান অবস্থার কারণে।
সঞ্চয় কি কমছে?

ইতিমধ্যে ব্যাংকে নিয়মিত সঞ্চয়ে কিছুটা ভাটা পড়েছে। কমছে নতুন বিনিয়োগের হারও।

সেই সঙ্গে নতুন করে সঞ্চয়ী কোন প্রকল্পে মানুষের আগ্রহ কমেছে বলে জানাচ্ছেন ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট মানুষেরা।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম মনে করেন, লকডাউন পরিস্থিতির কারণে সারাদেশেই মানুষ সঞ্চয় কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে।

“সঞ্চয় কমেছে কারণ মানুষের ইনকাম কমেছে। আমাদের এখানে যেসব আমানতকারী ছোট ছোট সঞ্চয়ী স্কীমগুলো চালান, বিশেষ করে তাদের সঞ্চয়ে এর প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার হারও কমেছে গত এক দেড় মাসে, বিশেষ করে যারা কম টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতেন।”

এদিকে, বেসরকারি ব্যাংক আইএফআইসি’র একজন কর্মকর্তা হাবিবা সুলতানা বলছিলেন, গত এক মাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ সঞ্চয়পত্র ভেঙে ফেলেছে।

“কী কারণে ভাঙছে, তাতো জানি না। কিন্তু সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে অনেকেই সঞ্চয়পত্র ভেঙে নতুন করে কেনে। কিন্তু এবার নতুন করে কেনার হার অনেক কম।”

আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান মনে করেন, করোনাভাইরাসের আতংক এবং সাধারণ ছুটির কারণেও মানুষ ব্যাংকিং কম করেছে।

“তবে সাধারণভাবে সঞ্চয় করার ক্ষেত্রে কিছুটা ধীর গতি দেখছি আমরা। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নতুন ব্যবসা শুরু করা কমেছে বলে মনে হচ্ছে।”

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বলে এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি প্রদানের কাজ করায় ব্যাংকটি বড় কোন সংকটে পড়েনি বলে মনে করেন মি. রহমান।
Image caption ব্যাংকগুলো বলছ সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে, তবে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর দাবি করছে বিক্রি অপরিবর্তিত রয়েছে

এদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেনি বলে দাবি করেছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের একজন উপপরিচালক মহিনুর ইসলাম জানিয়েছেন, সঞ্চয়পত্র বিক্রির হার আগের মতই আছে।

তবে তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি মুনাফা তোলার হার বেড়ে গেছে, বিশেষ করে পেনশনার এবং পরিবার সঞ্চয়পত্রের, অর্থাৎ যারা সঞ্চয়পত্রের আয়ের ওপর নির্ভরশীল বিনিয়োগকারী বয়স্ক ও নারী, তাদের মধ্যে।

এদিকে আয় কমে যাওয়ার ধারা দীর্ঘায়িত হলে একদিকে মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের সঞ্চয় কমে তলানিতে ঠেকলে, সেটা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে বলে মনে করেন বিআইডিএসের নাজনীন আহমেদ।

“অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে সমাজে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ঘটনা ঘটে। ফলে সেটা থামাতে হলে সরকারকে সচেতন হতে হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সরকার একা সেটা সামাল দিয়ে উঠতে পারেব না।” এজন্য সমাজের বিত্তবান মানুষেরও এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মনে করেন, “যেমন বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কর্মী ছাটাই না করে,সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।



এ পাতার আরও খবর

বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া হচ্ছে: রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া হচ্ছে: রণধীর জয়সওয়াল
আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারে নেতানিয়াহুর আবেদন খারিজ আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারে নেতানিয়াহুর আবেদন খারিজ
ইউক্রেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর ইউক্রেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর
ইসরায়েলে অস্তিত্বের সংকটে নেতানিয়াহুর সরকার ইসরায়েলে অস্তিত্বের সংকটে নেতানিয়াহুর সরকার
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়, বিশেষজ্ঞরা কি বলছে? ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়, বিশেষজ্ঞরা কি বলছে?
শেখ হাসিনা অন্তত ডামি-ডামি নির্বাচন করেছে, আর এরা বলে ইলেকশনেরই দরকার নেই শেখ হাসিনা অন্তত ডামি-ডামি নির্বাচন করেছে, আর এরা বলে ইলেকশনেরই দরকার নেই
বড় শয়তান এখনও আমাদের কাঁধে ‘ ঐক্যই দরকার : মাহফুজ আলম বড় শয়তান এখনও আমাদের কাঁধে ‘ ঐক্যই দরকার : মাহফুজ আলম
বাংলাদেশে নৈরাজ্যকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সরকার: তারেক রহমান বাংলাদেশে নৈরাজ্যকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সরকার: তারেক রহমান
‘যুদ্ধকক্ষ থেকে নিজেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন খামেনি’ ‘যুদ্ধকক্ষ থেকে নিজেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন খামেনি’
সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠিয়েছে ডব্লিউএইচও: হেলথ পলিসি ওয়াচ সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠিয়েছে ডব্লিউএইচও: হেলথ পলিসি ওয়াচ

আর্কাইভ

জামায়াতের সমাবেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৭ দফা ঘোষণা
গোপালগঞ্জের হত্যার ঘটনায় কেন ময়নাতদন্ত হয়নি
গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ আরও ১ জনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৫
গোপালগঞ্জে ৪ মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না: আইন ও সালিশ কেন্দ্র
বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক, ইস্তাম্বুলের মেয়র গ্রেপ্তার
ভারতের সঙ্গে শিগগিরই বাণিজ্য চুক্তি: ট্রাম্প
ইরাকে শপিং মলে আগুন, নিহত ৫০
থমথমে গোপালগঞ্জে কারফিউ চলছে
আলাস্কায় ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ৪